খালনায় রাতের অন্ধকারে প্রায় ৫০টি চারাগাছ ভেঙে দিল দুষ্কৃতীরা, ক্ষোভ স্থানীয়দের
কল্যাণ অধিকারী
❏ মাস কয়েক আগে বসানো গাছগুলি থেকে সদ্য গজিয়ে ওঠা কাঁচা কচি পাতা বেরিয়েছিল।
❏ হাজারখানেক গাছের চারা রক্ষা করতে বাঁশের চাঁচারি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়।
❏ রাস্তার ধারে বসানো গোটা পঞ্চাশেক চারা গাছের গোড়া রাতের অন্ধকারে ভেঙে দিল দুষ্কৃতীরা।
❏ শত্রুতার বশেই এতগুলো গাছ ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
❏ বিষয়টি নজরে রাখছি। এমন ঘটনা ঘটলে প্রয়োজন হলে প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া হবে, জানান বিডিও আসিফ ইকবাল।
রাতের অন্ধকারে রাস্তার ধারে বসানো গোটা পঞ্চাশেক চারা গাছ গোড়া থেকে ভেঙে দিল দুষ্কৃতীরা। আমতা-২ ব্লকের খালনা গ্রাম পঞ্চায়েতের হিয়োপ এলাকার ঘটনা। এই ঘটনায় হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং গাছ লাগানোর উপকারিতা নিয়ে সচেতনতা শিবির গড়ে তোলা হচ্ছে। এমন একটি সময় এতগুলো গাছ ভেঙে দিল দুষ্কৃতীরা। শত্রুতার বশেই এতগুলো গাছ ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
উমফুন পরবর্তী সময়ে খালনা এলাকার বহু গাছ ভেঙে গিয়েছে। হিয়োপ এলাকায় খালের পাড় শক্ত করতে আকাশবাণী, শিশু, খিরিস, মেহগনি সহ একাধিক প্রজাতির প্রায় হাজার খানেক চারাগাছ বসানো হয়েছিল। মাস কয়েক আগে বসানো গাছগুলি থেকে সদ্য গজিয়ে ওঠা কাঁচা কচি পাতা রক্ষা করতে বাঁশের চাঁচারি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। সেই চাঁচারি ভেঙে চারা গাছ গোড়া থেকে ভেঙে দিয়েছে কে বা কারা। নিজেদের রক্ষা, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছ বসানো বেশি করে প্রয়োজন। কিন্তু কিছু মানুষ শত্রুতার কারণে এমন ঘৃণ্য কাজ করেছে। এমনটাই জানান স্থানীয়রা। তাঁদের আরও অভিযোগ, চেঁচারি সরিয়ে গাছ গুলোর ডাল ভেঙে দিয়েছে। কোথাও আবার গাছ উবরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। নজরে আসতেই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে বিষয়টি জানানো হয়। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান গ্রামবাসীরা।
খালনা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান টুনু মন্ডল জানান, “খালনা-বাকসি খালের ধারে ইউক্যালিপটাস, শিশু, খিরিস গাছ মিলিয়ে প্রায় ১হাজার পিস গাছ বসিয়েছিল খালনা গ্রাম পঞ্চায়েত। ওই এলাকায় একাধিক চারা গাছগুলোকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ভেঙে দেওয়া গাছের ছবি পাঠিয়েছে এলাকার মানুষজন। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে জানানো হবে। গাছগুলি রক্ষা করার জন্য চেঁচারি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। সেই চেঁচারি সরিয়ে গাছ গুলো ভেঙে দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷”
আমতা-২ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক আসিফ ইকবাল জানান, “আমার কাছে খবর এসেছে দু-একটি জায়গায় গাছ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এমনটা করা উচিৎ না। আমরা বিষয়টি নজরে রাখছি। এমন ঘটনা ঘটলে প্রয়োজন হলে প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া হবে।”
গ্রামবাসীদের কথায়, পরিবেশকে সুস্থ রাখতে গাছ বসানো হয়েছে। এবার সেই গাছগুলো ভেঙে দিয়ে গ্রামে অস্থিরতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে কিছু মানুষ। নিয়মিত গাছগুলো পরিচর্যা ও লক্ষ্য রাখতেন মানুষজন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এতগুলো গাছ ভেঙে দিয়েছে। যদি গ্রামের একজনকে গাছগুলোকে রক্ষার জন্য রাখা হয় তাহলে এমন ঘটনা সামাল দেওয়া সম্ভব হবে। পরিবেশ প্রেমীদের কথায়, গাছ বসানো অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। কিন্তু এভাবে এতগুলো চারা গাছ ভেঙে দেওয়া দুষ্কৃতীদের কাজ। এ বিষয় স্থানীয় বিডিও এবং প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হবে। যাতে করে নজরে রাখা হয় সমস্তটা। স্থানীয় এক যুবক গাছগুলোর কথা হ্যাশট্যাগ করে মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশের নজরে আনার চেষ্টা করেছে।