মানুষের জীবন রক্ষায় পাঠ দিল আদালত!

কল্যাণ অধিকারী

অতিমারি পরিস্থিতিতে হাইকোর্ট শেখাচ্ছে শারদীয় মরসুমে কীভাবে রক্ষা পাবে মানুষের জীবন! চারপাশে দেবীপক্ষের দেখনদারি শুরু হয়ে গিয়েছে। মিলছে গালভরা প্রতিশ্রুতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী করোনাভাইরাস সংক্রমণের হারে শীর্ষস্থানে দিকে এগোচ্ছে ভারত। এমন একটি সময় বঙ্গে শারদীয় মরসুম। মানুষের জীবন রক্ষায় পাঠ দিল আদালত!

বিশ্বজুড়ে আবারও দাঁত ফোটাতে শুরু করেছে করোনা। পিছিয়ে নেই কলকাতাও। ক্রংক্রিটের শহরে হুহু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এমন একটি সময়ে দুর্গা পুজোয় ভিড় সম্ভাবনা নিয়েই ঘুম উড়েছে প্রশাসনের। এরমধ্যেই সোমবার পুজো প্যান্ডেলে ‘নো এন্ট্রি’ জোন করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে আদালতের রায় শুনে অনেকে স্বস্তি পেয়েছেন। কিন্তু এরমধ্যেই পুজো অনুমতি মামলায় রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি হাইকোর্ট-এ গৃহীত হয়েছে। কাল বুধবার এই মামলার শুনানি হতে পারে এমনটাই সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে।

পুজোর ভিড়ে লুকিয়ে থাকা বিপদের আঁচ পেয়েই হাইকোর্ট যুগান্তকারী রায় দিয়েছে। পুজোয় ভিড়ে সাধারণ মানুষের পক্ষে ৬ ফুটের দূরত্ব বজায় রাখা মুশকিল। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি পালন অসম্ভব হয়ে উঠবে। ইতিমধ্যে বেশকিছু মণ্ডপে পৌঁছে পুজো উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেভাবে মানুষজন পুজোর তিনদিন আগে থেকে পথে নেমেছেন তা নজর এড়ায়নি তাঁর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবার আশঙ্কায় প্রত্যেককে মাস্ক ব্যবহারের কথা বলেছেন তিনি। কিন্তু শুধুমাত্র মাস্ক ব্যবহারে কি সামাল দেওয়া যাবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাটাও প্রয়োজন। করোনা নিয়ন্ত্রণেও সচেতন থাকতে হবে আম-জনতাকে।

পুরোহিত মন্ত্রপাঠ করবেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে মাইকে ঘোষণা করা হবে। মণ্ডপে প্রবেশের মুখে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু তারপর? হাজারও মানুষের পুজো দেখার ভিড়ে করোনা বিধি মেনে চলার বিষয়টি আদৌ কি নিয়ন্ত্রণে থাকবে প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র। এরপরেই বিষয়টি আদালতে পৌঁছায়। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ‘নো এন্টি’ নির্দেশের পর খুশি হয়েছেন চিকিৎসক থেকে বিভিন্ন সংগঠন। কিন্তু রায় শুনে বহু পুজো উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে খোলামেলা প্যান্ডেল করেছে। সুদৃশ্য প্রতিমার সামনে দর্শনার্থী শূন্য মণ্ডপ ভাবনাতেই আনতে পারছে না উৎসব-উদ্যোক্তারা।

ফোরাম ফর দুর্গোৎসব কমিটি ইতিমধ্যে পুজোর রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে ন্যায়ালয়ের দরজা খটখটাতে শুরু করেছেন। প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় যাবার তোড়জোড় শুরু করেছে বলে জানা গেছে। তবে এরমধ্যেই রাজনীতির রঙ টেনে এনেছেন কেউ কেউ। যেহেতু মামলাকারীর আইনজীবী ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তাই সোমবারের রায়ে বামেদের জয় দেখছে। তাই এবার সরাসরি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে পুজো-রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছে এমনটাই আলোচনা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *