শনিবারই দাদা বিজেপিতে! অনুগামীরা দ্বিধাবিভক্ত
কল্যাণ অধিকারী
একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে তুলোধনা করে বাংলায় ৪২-০ করা ডাক দেওয়া দাদা বিজেপি-র পতাকা হাতে তুলে নিচ্ছেন। ভাবতে পারছিনা দাদা সাম্প্রদায়িক দলের হাত ধরবেন! প্রশ্নটা গ্রামীণ হাওড়ার দাদার অনুগামী’দের। শনিবার বিজেপি পরিবারের সদস্য হওয়া প্রায় পাকা শুভেন্দুর। এমন একটি সময়ে দ্বিধাবিভক্ত দাদার অনুগামীরা।
শনিবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠে অমিত শাহের সভায় ‘মেগা’ সভা। জোরকদমে চলছে তার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শুক্রবার কলেজ মাঠের প্রস্তুতি ও হেলিপ্যাড পরিদর্শন করেছেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত কুমার দাশ। জেলার কো-অবজারভার লক্ষীকান্ত সাউ। শনিবার মেদিনীপুরে অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকে দলে পেতে চেষ্টার কসুর করেনি বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতারা। চলতি সপ্তাহে মঙ্গলবার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন করেছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গী। তার আগে শুভেন্দুকে ছোট ভাই পরিচয় দিয়েছিল মুকুল রায়। তাঁর পরিবারের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক তাও জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন, শুভেন্দুর মতো নেতাকে বিজেপিতে স্বাগত জানাবেন। শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত কণিষ্ক পণ্ডা জানিয়েছেন ১০জনের মত সাংসদ ৭০জন বিধায়ক শুভেন্দুর সঙ্গে শাহের সভায় যোগ দেবেন। কথার কথা নয় মেদিনীপুরের সভায় ঠিক কতজন সাংসদ, বিধায়ক এবং কাউন্সিলরদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন শুভেন্দু তার দিকে নজর থাকবে শনিবার।
রাজনীতিতে চির শত্রু বা চির বন্ধু বলে কিছু হয় না। এতদিন যিনি বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছেন এবার তিনি দিদির বিরুদ্ধে মুখ খুলবেন এটাই তো স্বাভাবিক দাবি বিজেপির জেলা স্তরের এক নেতার। একুশের বিধানসভার ভোটে শুভেন্দুকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করেই এগোবে দল। শুভেন্দুবাবুও চান রাজ্যের সমস্ত মানুষের জন্য কাজ করতে। তৃণমূলে মমতার পরের আসনটি ভাইপোর জন্য। তাই তিনি বুঝেছেন বিজেপিতে যোগ দিলে সন্মান পাবেন। স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা। এর আগে হলদিয়ায় একটি অরাজনৈতিক মঞ্চে শুভেন্দু জানিয়েছেন, “আমার পরিবার ছোট নয়। আমার পরিবার বাংলা ও বাঙালি।” অনুগামীদের কথায়, দাদা অন্য দলে যোগদান করার আগে ব্যক্তিগত কথাগুলো বলেছেন। তিনি সব সময় মানুষের জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু এ ভাবে বিজেপিতে যোগ দিতে চলাটা মানা যায় না। আবেগ আর ধৈর্যের পরীক্ষা উনি বরাবর নিয়েছেন। যে নন্দীগ্রাম ওঁনাকে রাজনৈতিক অক্সিজেন দিয়েছে। যে মানুষগুলো আজও দাদাকে দেখে দল করে। যে অনুগামীরা ফ্লেক্স টাঙিয়ে দাদার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল, তা কখনোই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য নয়। দল করেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-কে দেখে। দাদা বিজেপিতে গেলেও মমতার দলের সৈনিক হয়ে তৃণমূলে থাকব দাবি অনুগামীদের।
বিদ্রোহী শুভেন্দু দলের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন। বিজেপিতে যোগদান এখন সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু দুই দশক ধরে যাঁদের আদর্শ করে দল করে এসেছে আজ তাঁরা দলত্যাগ করতে চলেছেন। রাজনীতির কাছে উনি নীতি এবং আদর্শের দিক দিয়ে দায়বদ্ধতা পালন করলেন না। একদিন যাঁদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেন তাঁদের হাত ধরতে চলেছেন তিনি। আদর্শের দিক দিয়ে যা মানা যায় না বক্তব্য জেলার অনুগামীদের একটা অংশের।