সাংবাদিক অর্ণবের মুক্তি চাইছে ‘ভারত’!

কল্যাণ অধিকারী

হাইলাইটস
অর্ণব গ্রেফতার হতেই স্টুডিওয়র বাইরে শুরু হয়েছে চেঁচামেচি।
সংবাদমাধ্যমের কর্তা গ্রেফতার নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় এগিয়ে বিজেপি।
সংবাদমাধ্যমের গলা দাবানোর চেষ্টা চলছে অভিযোগ বিজেপির।
‘ঔদ্ধত্য’ মানুষ ভালোভাবে নেয় না সতর্ক প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের একাংশের।

চিৎকার করে, হাত ছড়িয়ে স্টুডিওয় অতিথিদের ধমক দিয়ে থাকেন। ‘পুছতা হ্যায় ভারত’ স্লোগান খ্যাত সেই অর্ণব গোস্বামী ১৪দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে। তাঁর সামনে একের পর এক রাজনৈতিক নেতা, সিনে-দুনিয়ার অভিনেতা তটস্থ হয়ে পড়েছিল। রাহুল গান্ধী থেকে উদ্ভব ঠাকরে প্রত্যেককে শব্দবাণ-এর সামনে তুলে এনে অ্যাঙ্করিংয়ের শব্দটাকে বদলে দিয়েছিন অর্ণব গোস্বামী। এবার তাঁকেও রাত কাটাতে হল বিচারবিভাগীয় হেফাজতে।

গত আঠারো মাসে ঘরে-বাইরে শত্রু বাড়ানো রিপাবলিক এক নম্বরে পৌঁছে গিয়েছে। সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু কাণ্ডকে সকলের সামনে তুলে ধরে বাকি নিউজ চ্যানেলের খবরকে চাপা ফেলে দিয়ে শিরোনামে উঠে আসে। প্রতিটি মুহূর্তে গ্রাউন্ড জিরো থেকে সুপার এক্সক্লুসিভ লাইভ দেখানো রিপাবলিক চ্যানেলের কর্তা পুলিশের হাতে গ্রেফতার। এই নিয়েই অর্ণবের পক্ষে, অর্ণবের বিপক্ষে স্টুডিওয়র বাইরে শুরু হয়েছে চেঁচামেচি।

অর্ণবের পক্ষের বক্তব্য এইভাবে চিৎকার করে খবরের মাত্রাকে উঁচুতে তুলবার চেষ্টা অভিনবত্ব। নুইয়ে পড়া ‘মিডিয়া’ জাগিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক নেতা থেকে অভিনেতা সবাইকে আতস কাঁচের তলায় নিয়ে এসেছিলেন। বাকি মিডিয়া চ্যানেল অর্ণবকে লক্ষ্য করতে বাধ্য হয়। সেটাই হয়ে ওঠে চক্ষুশূল।

অর্ণবের বিপক্ষর অভিযোগ বেশ ধারালো। তাঁদের কথায়, কানে তালা লাগানো চিৎকার সমানে করে যান তিনি। বিপক্ষে থাকা অতিথিদের মাইকের ভলিউম কমিয়ে দিতেন। একপক্ষ বিচার করে সাংবাদিকতা চালিয়ে যাওয়াটা ওঁনার পেশা। একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের অ্যাজেন্ডা হয়ে কাজ করতেন। বিপক্ষের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রতি শব্দবাণ ছিল অত্যন্ত অগণতান্ত্রিক ও অপমানসূচক।

অর্ণবের গ্রেফতারি দু’বছর আগের একটি ঘটনা নিয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ সামনে আসে। পুলিশ সেই সময় তদন্ত করলেও কোন অজানা কারণে ফাইল বন্ধ হয়ে যায়। বুধবার মধ্যরাতে নতুন নির্দেশ দেয় আদালত। সেইমতন বুধবার সকাল ৬টায় অর্ণবের বাড়িতে পৌঁছে যায় মহারাষ্ট্র পুলিশের একটি দল। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ১৪দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালত থেকে।

অর্ণবকে গ্রেফতার করা নিয়ে মাঠে নেমেছে বিজেপি। তাঁদের প্রশ্ন মহারাষ্ট্র সরকারের ঘৃণ্য রাজনীতির শিকার হয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের গলা চেপে ধরতে চাইছে তাঁরা। অমিত শাহ’র অভিযোগ, কংগ্রেস ও তার সহযোগী দলগুলি আবারও গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জাজনক কাজ করেছে। জে পি নাড্ডা বলেন, “সোনিয়া-রাহুল গান্ধীর নির্দেশিত পদক্ষেপের আরও একটি নিদর্শন এটি।” তবে বিষয়টি আইন মেনে চলছে সাংবাদিকদের জানিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারের মুখপাত্র।

আরামবাগ টিভি নামক ইউটিউব চ্যানেলের সম্পাদক সফিকুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় টুইট করে মুখ খুলেছিলেন রাজ্যপাল। তিনি লেখেন, ‘সরকারি টাকা ভুয়ো ক্লাবগুলির মধ্যে বিলি করা তুলে ধরাতে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার হয়েছে।’ তাঁর নিশানা ছিল রাজ্যের সরকারের প্রতি। তবে অর্ণব গ্রেফতার নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। তৃণমূলের পক্ষ থেকে মুখ খোলেনি কেউ। তবে একাংশের মতে ঔদ্ধত্য মানুষ ভালোভাবে নেয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *