বিশেষ লোকাল ট্রেনে ফাইন করা নিয়ে ধুন্ধুমার লিলুয়া স্টেশনে

কল্যাণ অধিকারী

মেট্রো চলাচল শুরু হলেও লোকাল ট্রেন চালুর বিষয় এখনও কোন উদ্যোগ নেই রেলের! মার্চ মাস থেকে এখনও বন্ধ লোকাল ট্রেন পরিষেবা। সমস্যার ঘেরাটোপে থাকা সাধারণ মানুষ দাবি তুলেছেন ‘স্পেশাল ট্রেনে উঠতে দিন, না হলে লোকাল ট্রেন চালু করুন’। আর এই দাবিতে এদিন উত্তাল হয়ে উঠল লিলুয়া স্টেশন। ভাঙচুর চলল স্টেশন মাষ্টারের ঘরের সামনে।

রবিবার হুগলির পাণ্ডুয়া স্টেশনে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। এরপর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে হুগলি জেলার একাধিক স্টেশনে। তার একদিন পর সোমবার লিলুয়া স্টেশন কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের কথায়, সোমবার বাসে ওঠার সমস্যার জন্য স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে ওঠে। কিন্তু লিলুয়া স্টেশনে ট্রেন পৌঁছাতেই রেল পুলিশ বেশকিছুজনকে আটক করে ফাইন করে। লোকাল ট্রেন চালু করছে না রেল কর্তৃপক্ষ। সাধারণ মানুষ গণপরিবহন সমস্যায় পড়ে স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে উঠলে আটক করা হচ্ছে। সামনে পুজো সময়ে কাজে যেতে পারছে না তাঁরা। কলকাতায় মেট্রো চলাচল শুরু হলেও লোকাল ট্রেন ছাড়া যাত্রীদের সমস্যা নিবারণ হবে না। এদিন স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে যাত্রীদের আটক করলে ঘটনার সূত্রপাত। দীর্ঘদিন লোকাল ট্রেনে যাত্রা না করায় বাসে যাতযাত করতে টাকা ও সময় বেশি দুটোই বেশি লাগছে। এ কারণেই এদিন সাধারণ যাত্রীদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। স্টেশন মাষ্টারের ঘর সহ বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালায়। তবে পুলিশের বিশাল বাহিনী সঙ্গে র‌্যাফ আসতেই শেষ পর্যন্ত রণে ভঙ্গ দেয় ক্ষুব্ধ জনতা।

রেল সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে একটি স্পেশাল ট্রেনে চেকিং করা নিয়ে জটলার সৃষ্টি হয়। ফাইন করা হতেই একাধিক যুক্তি খাড়া করেন তাঁরা। আনলক-পর্বে এখনও কেন লোকাল ট্রেন চালু হয়নি বলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বেশকিছু সাধারণ মানুষ। তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয় বহু মানুষ। ভাঙচুর করা হয় স্টেশন মাষ্টারের ঘরের সামনে। পুলিশের বিশাল টিম সঙ্গে র‍্যাফ আসতেই এলাকা ছেড়ে পালায়।

সাধারণ মানুষের অভিযোগ, আনলক পর্বে শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় দোকান-বাজার, অফিস-কাছারি পুরোদমে খুলে গিয়েছে। কিন্তু গণপরিবহণের ক্ষেত্রে লোকাল ট্রেন পরিষেবা এখনও থমকে। ফলে মানুষের দুর্দশা এখনও যে কে সেই। মেট্রো চলাচল শুরু হলেও লোকাল ট্রেন চালু করা নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ। হাওড়া স্টেশন পৌঁছাতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে আম-জনতার। স্টাফ স্পেশাল ট্রেন ফাঁকা যাচ্ছে। বহুক্ষেত্রে বাধ্য হচ্ছেন স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে উঠে হাওড়া পৌঁছাতে। রেলের বোঝা দরকার, মানুষের দুর্দশা যখন চরমে তখন মোকাবিলা করার জন্য লোকাল ট্রেন চালানো প্রয়োজন। তা না করে দুর্দশা বাড়িয়ে তুলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *