জগৎবল্লভপুরে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে বস্তা চাপা দিল স্বামী ফাঁসি চাইল মৃতার মা-বাবা

কল্যাণ অধিকারী

হাইলাইটস
❏ আখ রস বিক্রি করা যুবক বিয়েতে যৌতুক নেন ৫০ হাজার টাকা ও ৪ ভরি সোনা
❏ বিয়ের দুবছর পর থেকে আরও টাকার দাবিতে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু
❏ কুপিয়ে খুন করেছে রাতে ফোন করে প্রতিবেশীরা জানালে ছুটে যায় দাদা ও আত্মীয়রা
❏ এমন নৃশংস হত্যাকারীদের ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি মৃতার পরিবারের
❏ ঘটনার জেরে ক্ষোভে ফুঁসছে মৃতার আত্মীয় পরিজন

বিয়ের দশ বছরের মধ্যে প্রথম দু’বছর ভালোভাবে ঘর সংসার করেছে। বাকি ৮বছর শ্বশুর বাড়ির শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে মেয়েকে। বারে বারে টাকা চেয়েছে। ১০, ২০ এমনকি ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি। তারপরও ওঁরা আমার মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংস করে মারল। ওঁদের যেন ফাঁসিতে ঝোলান হয়। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে বাড়ির মেঝেয় বসে বলে চলেছেন সবজি বিক্রি করা মা-বাবা। মৃতার নাম সুপ্রিয়া মন্ডল (২৮)।

মৃতার বাবা বংশী কোটালের অভিযোগ, ১০ বছর আগে বিয়ে হয়েছে মেয়ের। সাত বছরের নাতনি রয়েছে। বিয়ের দু’বছর পর থেকেই অত্যাচার শুরু হয় মেয়ের উপর। বিয়ের সময় যৌতুক হিসাবে ৫০হাজার টাকা ও ৪ ভরি সোনা ও অন্যান্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছিল। তারপরও টাকার দাবি করতো ওরা। যখন যেমন সম্ভব দেওয়া হয়েছে। এই তো ক’দিন আগে ৩০ হাজার টাকা পারিবারিক কাজের জন্য চেয়েছিল তাও দিয়েছি। তারপরও মেয়ের উপর অত্যাচার কমেনি। দুদিন আগেও বাপের বাড়িতে ফোন করেছিল মেয়ে। কথা হয়েছিল বেশ কিছুক্ষণ। ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারা যায়নি জামাইয়ের মাথায় খুন করার পরিকল্পনা। শুক্রবার রাতে সব শেষ করে দিল জামাই। শনিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ মেয়ের শ্বশুর বাড়ির কাছ থেকে কেউ ফোন করে আমার ছেলেকে খোঁজ করে। ছেলেকে সমস্ত কিছু জানায়। এরপরেই ছেলে প্রতিবেশীদের নিয়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি পৌঁছে যায়। ততক্ষণে সব শেষ। মেয়েকে ওঁরা কুপিয়ে খুন করেছে। রাতে জয়পুর থানার পুলিশ খবর দিয়েছে। ওঁদের একমাত্র সাজা ফাঁসি হওয়া দরকার।

পরিবার ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, জয়পুর থানার সেহাগড়ী রাজবংশী পাড়ার সুপ্রিয়ার সঙ্গে জগৎবল্লভপুর থানার মাজুক্ষেত্র এলাকার যুবক নরোত্তম মন্ডলের দশ বছর আগে দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল। নরোত্তম পেশায় জরির কাজের শ্রমিক। লকডাউন শুরুর পর থেকে জরির কাজে ভাটা। আখ রস বিক্রির কাজ করতো। প্রায় দিন রাত একটা নাগাদ মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফেরে। ঘটনার জেরে মৃতার বাপের বাড়ির পড়শিরা ক্ষোভে ফুঁসছে। বাপের বাড়ি আসলে ছোট মেয়েকে নিয়ে প্রত্যেকের বাড়িতে দেখা করে যেত। শনিবার দেখা গেল বাড়ির সামনে ভিড় স্থানীয়দের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জগৎবল্লভপুর থানার পুলিশ। ইতিমধ্যে স্বামীকে গ্রেফতার করেছে। আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। জয়পুর থানার ওসি তাপস কুমার নস্কর জানিয়েছেন, জেবিপুর থানার পুলিশের পক্ষ থেকে রাতে বিষয়টি জানান হয়। এরপরেই ঘটনার কথা মেয়েটির মা-বাবার কাছে রাতেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *