তৃণমূলের সঙ্গে জোটে ‘না’! মমতা বিরোধী অধীরকে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব দিলেন সনিয়া
কল্যাণ অধিকারী
❏ পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে ‘ট্র্যাকে’ আনতে ‘যোগ্যতম ব্যক্তি’ অধীরে আস্থা, সাফ বার্তা দশ জনপথের।
❏ বিধানসভা ভোটে তৃণমূলে ‘না’! বাম-কংগ্রেস জোট হওয়ার সম্ভাবনা মসৃণ হল বাংলায়।
❏ প্রদীপ ভট্টাচার্য থাকলেও যোগ্য ও পছন্দের তালিকায় প্রথম ছিলেন অধীর।
❏ তৃণমূল এবং বিজেপির মোকাবিলা করতে দলকে লড়াইয়ে আনতে পারবে যুক্তিতেই সিলমোহর।
❏ অধীরকে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ায় স্নায়ুর চাপ বাড়ল তৃণমূলে।
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের হাল ফেরাতে গুরুদায়িত্ব সপে দেওয়া হল মমতা বিরোধী বলে পরিচিত অধীর রঞ্জন চৌধুরীর হাতে। কংগ্রেসকে ‘ট্র্যাকে’ আনতে ‘যোগ্যতম ব্যক্তি’ একমাত্র অধীর দাবার চালটা দিয়েছিল মমতার আর এক বিরোধী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। সূত্রের খবর বুধবার রাতে রাহুলের পছন্দের অধীরকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নিয়োগপত্রে সই করে দেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। দ্বিতীয় বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা নির্বাচন। সোমেন মিত্রের মৃত্যুর পরে পশ্চিমবঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করতে যোগ্য নেতার প্রয়োজন ছিল। দলকে সামলাবে একিসঙ্গে তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই দিতে পারবে। প্রদীপ ভট্টাচার্য থাকলেও যোগ্য ও পছন্দের তালিকায় প্রথম ছিলেন অধীর বাবু। বরাবর মমতা বিরোধী বলে পরিচিত অধীর চৌধুরী রাজনীতিতে দমবার পাত্র নন! আসন্ন একুশের ভোটে বাংলায় কংগ্রেস যদি কিছুটা আশাব্যঞ্জক ফল করে তবে তা বহরমপুরের ‘বেতাজ বাদশা’ অধীর চৌধুরীর দ্বারাই সম্ভব। এই যুক্তিতেই প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর ‘পছন্দে’ই সিলমোহর দিলেন সনিয়া গান্ধী এমনটাই জানা যাচ্ছে।
উনিশের লোকসভা ভোটে মুর্শিদাবাদের মাটি পেতে মরিয়া ছিলেন মমতা। দলের বিশ্বস্ত ও যোগ্য শুভেন্দু অধিকারীকে দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন। মাটি কামড়ে পড়ে থেকেও অধীর চৌধুরীর জেতার রেকর্ড ভাঙতে পারেননি। তবে, অধীরকে হারাতে না পারলেও নিজের অস্তিত্বের লড়াইয়ে আশানুরূপ ফলাফল করেছিল তৃণমূল। লোকসভা ভোটে মূর্শিদাবাদ জেলায় ২২টি বিধানসভার মধ্যে ১৬টিতে এগিয়ে রয়েছে জোড়াফুল! একুশে হাল ছাড়তে রাজি নয় তৃণমূল। লক্ষ্য এবার ২২ এ ২২। অধীর বাবুর প্রদেশ সভাপতি হওয়ায় অল আউট আক্রমণে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াবে অধীর। স্নায়ুর চাপ কিছুটা বাড়ল তৃণমূলে।
অধীর চৌধুরী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট সম্ভাবনায় দাঁড়ি টেনে দেওয়া হল। যদিও রাজনীতিতে শত্রুতা ভুলে সৌজন্যের রাজনীতি বহুবার দেখেছে দেশ। আদৌ বদলাবে কি কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্ক তা ভবিষ্যৎ বলবে। তবে, বাম-কংগ্রেস জোট হওয়ার সম্ভাবনা মসৃণ হল বাংলায়। সেক্ষেত্রে তৃণমূল এবং বিজেপির মোকাবিলা করতে পারবে কর্মী-সংগঠন হারানো বাম-কংগ্রেস। তাদের হারাবার কিছু নেই। যে ক’টি সিট বাড়বে বিধানসভায় বিরোধী রাজনীতির কন্ঠ শক্ত হবে। অস্বস্তি একটাই মান্নানের সঙ্গে অধীরের পুরনো সম্পর্ক ভালো নয়। তবে, তাঁর পাশে কেউ থাকুক বা না থাকুক, তিনি লড়ে যাবেন! এটাই অধীর রঞ্জন চৌধুরীর রাজনীতির ইউএসপি।