দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর অনেক প্রাণহানি! বদলায়নি চিত্র, লকডাউনে পুলিশ আধিকারিক-সহ মৃত ৩

কল্যাণ অধিকারী

শিলিগুড়ি থেকে কলকাতার পর্ণশ্রী এলাকার বাড়িতে ফিরেছিলেন রাজ্য পুলিশের আধিকারিক দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়।
লকডাউনের সকালে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা, পুলিশ আধিকারিক-সহ মৃত ৩।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ২০১৭ সালে প্রয়াত হয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য।
২০১৬ সালে গাড়ি উল্টে গুরুতর জখম হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিভিন্ন রেস্তরার কাছে একাধিক লরি দাঁড়িয়ে থাকে। গতি নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থেকে যায়।

লকডাউন ভোর বিভীষিকায় পরিণত হল রাজ্য পুলিসের ১২ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসার দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের। শিলিগুড়ির ডাবগ্রামে ব্যাটেলিয়নের সদর দপ্তর থেকে কলকাতায় ফেরার পথে হুগলির দাদপুরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তাঁর। শোকের ছায়া বেহালার পর্ণশ্রী এলাকার বাড়িতে।

এদিনের দুর্ঘটনা ২০১৭সালের মার্চ মাসের একটা সকালকে মিলিয়ে দিল। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে গুড়াপের কাছে পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী দোহারের কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য। শোকের ছায়া নেমে আসে সর্বত্র। আর এদিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ হুগলির দাদপুরে একটি বালির লরির পিছনে প্রচণ্ড গতিতে ধাক্কা দেয় রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডান্ট পদে কর্মরত দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি। এবারও ঘটনাস্থল দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে। ঘটনাস্থলেই প্রয়াত হন দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে থাকা গাড়ির চালক মনোজ সাহা ও দেহরক্ষী তাপস বর্মনও মারা গেছেন। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া প্রশাসনে।

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে (২ নম্বর জাতীয় সড়ক) একের পর দুর্ঘটনা ঘটলেও বদলাচ্ছে না কিছুই। এতগুলো প্রাণহানির পরেও কেন সজাগ হচ্ছে না প্রশাসন! সিঙ্গুরের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে উল্টে গিয়েছিল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গাড়ি। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন অভিষেক। তারপর এদিনের দুর্ঘটনা বুঝিয়ে দিল বদলায়নি কিছুই। একের পর এক দুর্ঘটনা নাম জড়াচ্ছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের। মৃত্যুর তালিকা বাড়ছে। শুক্রবার সকাল ৬টা অবধি ঠিকঠাক চলছিল দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি। তার ঠিক আধঘন্টার মধ্যে দাদপুর থানার হোদলা ব্রিজের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পুলিশ আধিকারিকের গাড়ি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ১২চাকার বালির গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। ওই বালি বোঝাই লরির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে গাড়িটি। মারা যান গাড়ির চালক এবং দেহরক্ষী সহ পুলিশ আধিকারিক।

সকালের দিকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে পুলিশের নজরদারি ঠিকঠাক না থাকার কারণে এত বড়ো দুর্ঘটনা, প্রশ্ন উঠছে। যদিও পুলিশের অনুমান চালকের ঘুমের আবেশের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। সমস্তটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গাড়িটির সামনের অংশ দলা পাকিয়ে গেছে। ইঞ্জিন বেরিয়ে এসেছে। স্থানীয়দের কথায়, ২নং জাতীয় সড়কে(দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে) বিভিন্ন রেস্তরার কাছে একাধিক লরি দাঁড়িয়ে থাকে। গতি নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থেকে যায়। অভিষেক বাবুর গাড়ি দুর্ঘটনার পর লরি দাঁড়িয়ে থাকা কমে গিয়েছিল। তারপর বছর ঘুরতেই আগের পরিবেশ ফিরে এসেছে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে না রাখার কারণে এদিনের মর্মান্তিক ও ভয়াবহ দুর্ঘটনা বলে প্রথমিক অনুমান পুলিশের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *