নির্মম অত্যাচারে অসাড় হয়ে গিয়েছে শরীর তবুও মেলেনি ছাড়, মারা-ই গেল হাথরসের ‘গণধর্ষিতা’ তরুণী

কল্যাণ অধিকারী

করোনা আবহে দুষ্কৃতীদের বিকৃত লালসার শিকার হতে হচ্ছে মহিলাদের।
চার দুষ্কৃতীর হাত থেকে রেহাই পেতে প্রাণপণ লড়াই চালিয়েছিল উত্তরপ্রদেশের তরুণী।
গণধর্ষণের পাশাপাশি তরুণীর উপর নৃশংস ও অমানবিক অত্যাচার চালায় দুষ্কৃতীরা।
১৫ দিনের লড়াই থেমে গেল মঙ্গলবার সকালে। কঠিন সাজা হোক দাবি জানালেন কোহলি।
আরও এক নির্ভয়া গণধর্ষণের কাহিনী সামনে আসতেই ফোঁসাতে শুরু করেছে দেশ।

ধর্ষণে মত্ত চার যুবকের কাছ থেকে রক্ষা পেতে প্রাণপণ লড়াই চালিয়েছিল তরুণী। কিন্তু চার দুষ্কৃতীর কাছ থেকে যখন ছাড়া পেয়েছিল ততক্ষণে শরীর থেকে বয়ে গিয়েছে অনেকটা রক্ত। নির্মম অত্যাচারে অসার হয়ে গিয়েছে শরীরের একাধিক অঙ্গ। গণধর্ষণের পাশাপাশি তরুণীর উপর নৃশংস ও অমানবিক অত্যাচার চালায় দুষ্কৃতীরা। ১৫ দিনের লড়াই থেমে গেল মঙ্গলবার সকালে। আরও এক নির্ভয়া গণধর্ষণের কাহিনী সামনে আসতেই ফোঁসাতে শুরু করেছে দেশ।

করোনা আবহে মানুষ রুজিরোজগার হারিয়ে সঙ্কটে পড়েছেন। প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছে। এমন একটি সময়েও দুষ্কৃতীদের বিকৃত লালসার শিকার হতে হচ্ছে মহিলাদের। লজ্জা-ঘৃণায় মাথা হেঁট। এ লজ্জা আসমুদ্রহিমাচল সইবে কী ভাবে। এ যেন ফের নির্ভয়া গণধর্ষণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি উত্তরপ্রদেশের হাথরসে। চিকিৎসকদের কথায়, মহিলার জিভে, মুখে কামড়ের একাধিক ক্ষত। শিরদাঁড়া মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আইসিইউ-তে রেখে সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছিল। শরীরের একাধিক অঙ্গ অসাড় ছিল। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসায় সাড়া দিতে পারেনি গণধর্ষণের শিকার হওয়া তরুণী।

গোটা দেশে দলিতদের উপর হামলার যত ঘটনা ঘটে, তার বেশিরভাগ ঘটে যোগীর রাজ্যে! কঠিন সাজা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরদারি স্বত্বেও দলিতদের উপর অত্যাচার কমানো যায়নি। তবে এই ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত চার জনই উচ্চবর্ণের এমনটাই সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, খুনের মামলা, একইসঙ্গে তফসিলি জাতি ও জনজাতি আইনে মামলা দায়ের হয়েছে বলে সংবাদদাতা সূত্রের খবর। উত্তরপ্রদেশে আইনশৃঙ্খলা বর্তমান সময়ে অনেকটাই লাগামছাড়া এমনটাই অভিযোগ আসছে। প্রায় নিয়ম করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উচ্চ ও নিম্নবর্তী পরিবারে লড়াই।

১৫দিনের জীবনযুদ্ধে হার মানলেন উত্তরপ্রদেশের গণধর্ষিতা তরুণী। পরিবার পারেনি সুস্থ করে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। চোখের জলে বাঁধ ভেঙে আসছে। জমিতে মা ও দাদার সঙ্গে ঘাস কাটছিলেন তরুণী। সকলের চোখকে ফাঁকি দিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যায় পাশের একটি বাজরা খেতের মধ্যে। সেখানেই চলে নৃশংস অত্যাচার ও গণধর্ষণ। মা হন্যে হয়ে খুঁজতে খুঁজতে যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে গিয়েছে। বাঁচিয়ে তোলার সমস্ত চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু শরীরের একাধিক অঙ্গ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসায় সাড়া দিতে পারেনি তরুণী। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করতে গেলেও পুলিশের জাগ্রত ভূমিকা দেখা যায়নি বলে জানা যাচ্ছে।

এমন নৃশংস ও অমানবিক অত্যাচার প্রসঙ্গে টুইটারে আরসিবি অধিনায়ক কোহলি লিখেছেন, “হাথরসে যা ঘটেছে তা অমানবিক, নিষ্ঠুরতার ঊর্ধ্বে।” সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছে নেটিজেন। মহিলাদের উপর অমানবিক অত্যাচার বন্ধ হোক। হ্যাশট্যাগ দিয়ে জাস্টিস চাই বলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা। দুষ্কৃতীদের কঠিন সাজার দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে, নির্ভয়া গণধর্ষণ ঘটনার পরেও একশ্রেণির দুষ্কৃতিদের লালসা যে কমেনি তরুণীর ঘটনা যেন তেমনি ইঙ্গিত করছে।

ছবিঃ প্রতীকী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *