প্রতিমা মিশ্রা এ দেশের বেটি, তাঁর লড়াইয়ে পাশে রয়েছি
কল্যাণ অধিকারী
ছবিগুলো দেখে কিছু কী বুঝলেন? দলিত মেয়েকে ধর্ষণ করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে পাষণ্ড গুলো চরম নির্যাতন চালিয়েছে। আর এক ‘মেয়ে’ পুলিশের সামনে দিনভর ঘটনার পরদা সরানোর সাংঘাতিক লড়াই দেখালেন।
নির্যাতিতা দলিত মেয়ের পরিবারের কাছে ছুটে যেতে সবাই যখন ঘোড়া রেস করছে। তখন আর এক মেয়ে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের কথা আপামর ভারতবাসীর কাছে তুলে ধরতে চাইছে। স্যালুট ঠুকি সাংবাদিক প্রতিমা মিশ্রা কে।
চ্যানেল এক নম্বর হলে গলা উঁচিয়ে লম্বাচওড়া বাণী শোনায়। কিন্তু চ্যানেল প্রথম চারে থাকলে তাদের সাংবাদিকরা এক নম্বর পরিশ্রম দিতে থাকে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বিচারের আশ্বাস দিয়ে কী বললেন! ডিএম নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কতটা হুমকি দিলেন! এসপি, ডিএসপি তাঁদের সাগরেদরা ধামাচাপা দিতে কতটা তেল খরচ করলেন! সে-সব বিচারব্যবস্থার লোকজন ঠিক সময়ে বিচার দেবে।
নির্যাতিতা র পরিবার তাঁদের কষ্টের ভাগ নিতে একজন মহিলা সাংবাদিক যে লড়াইটা দিলেন, আজ গর্বিত অনুভব করি সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত এই ভেবে। প্রত্যেক মানুষ নিজ পেশায় দায়িত্বশীল। চাকরি টিকিয়ে রাখতে সমস্তটা দিতে হয়। একজন মহিলা অফিসের এসি রুম ছেড়ে গ্রাউন্ড জিরোয় নেমে কাজ করে। যখন সামনে থাকে উত্তরপ্রদেশ সরকারের পুলিশ! বাকিটা বুঝে নিন।
এ দেশে গণতন্ত্র এখনও বর্তমান। যারা বলেন গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে ভুল বলছেন। এসপি, ডিএসপি সহ ৭ জন সাসপেন্ড! অভিযুক্ত-পুলিশকর্মীদেরও পলিগ্রাফ টেস্টের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কী বলছেন স্রেফ আই ওয়াশ? মনে পড়ছে বিকাশ দুবের শেষ পরিণতি? আগামী কী আছে জানেনা কেউ। কিন্তু এই চারজন ধর্ষকের কপালে কী দূর্গতি লেখা আছে তা কেউ জানেনা। ইউপি সরকার বিচার অন দ্য স্পট দেয়!
হাথরস কান্ডে নির্যাতিতার মৃত্যুর পর নিমেষে বদলে গেছে গঞ্জটা। এখন শুধুই ভারি বুটের শব্দ আর মুখ না খোলার চেনা পরিচিত হুমকি! তারপরও লড়তে পারে প্রতিমার মতো মেয়েরা। চ্যানেলে টিআরপি বাড়াতে ‘গাঁজা’ যদি বড়ো সাফল্য আনতে পারে। তবে নির্যাতিতার পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের উজাড় করা ভালোবাসা সমস্ত টিআরপি দূরে সরিয়ে লড়াইয়ের আগমনীর রূপরেখা তৈরি করে দিতে পারে।
এ মেয়ে মাটি কামড়ে লড়াই দিতে জানে। শুধুমাত্র হাত ছড়িয়ে, চিৎকার করে, একপেশে সুবিধাভোগী কথাবার্তা বলতে জানেনা। তাই হয়তো পুলিশের হাতে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট আর লাঠি দেখে জিজ্ঞাসা করে, “স্যার আমরা আসামী নয় আমরা পত্রকার। খবর তুলে আনা কাজ। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট আর লাঠি এ-তো আসামীদের জন্য। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ-এর জন্য নয়।”
ছবিঃ সংগৃহীত।