ভিন রাজ্যের পুণ্যার্থীর দেখা নেই ! পুণ্যস্নানের দিকে তাকিয়ে ‘হতাশ’ মেলায় আগত ব্যবসায়ীরা
কল্যাণ অধিকারী, গঙ্গাসাগর থেকে
কচুবেড়িয়া ঘাট বাসস্ট্যান্ডে ৩৫ জনের একটি দল সাগরে পৌঁছাবার অপেক্ষায়। এসেছেন বেগুসরাই থেকে। টিমের কর্তা ধিরাজ সাহু এর আগে দু’বার গঙ্গাসাগর তীর্থ সেরেছেন। অভিজ্ঞতার কারণে প্রচন্ড ভিড় ঠেলে যাবার প্রস্তুতি নিতে সবাইকে আগে থেকেই সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু কোথায় কি! গঙ্গাসাগর স্পেশাল বাসে কাকদ্বীপ বাসস্ট্যান্ডে নেমে ঠিক দেখছেন তো ঠাওর করতে পারলেন না। স্বেচ্ছাসেবক, পুলিশ আধিকারিকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন কিন্তু দেহাতিদের ভিড় কোথায় লট-এইট, লঞ্চ পরিষেবা, কচুবেড়িয়া বাসস্ট্যান্ড সর্বত্র একপ্রকার ‘সুনশান’। দুপুর একটা নাগাদ বাস রওনা দেবার আগে ধিরাজ সাহু বলেন, ‘গঙ্গাসাগর আসবার আগে সবাইকে জানিয়েছিলাম মেলায় ভিড় হবে কাপড়ের আঁচল না ছাড়তে। কিন্তু ভিড় নেই। ফাঁকায় ফাঁকায় কপিল মুনির কাছে পুজো দিতে পারবো’।
সরকারিভাবে রবিবারই শুরু হয়ে গিয়েছে এবারের গঙ্গাসাগর মেলা। পুণ্য স্নান ১৪ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে। গঙ্গাসাগর মেলা ঠেকাতে জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে। তবে শুনানিতে মেলা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়নি হাইকোর্ট। তবে মেলা চত্বরে জটলা না করবার এবং মাস্ক ব্যবহার বাড়ানোর জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতার প্রচার চালানো হচ্ছে। মেলা নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভিড় না করে তারজন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। এবারের গঙ্গাসাগর যাত্রায় লট এইট থেকে ভক্তজনের হাতে স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে। মাস্ক না পড়ে আসলে মাস্ক দেওয়া হচ্ছে। জটলা না করে ধীরে ধীরে লঞ্চে ওঠার ঘোষণা হচ্ছে। সর্বত্র মাস্ক ব্যবহার করার ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে।
মেলা চত্বর আধুনিকতার ছোয়া থাকলেও এখনও সেই ভাবে সাধু সন্তদের দেখা নেই। ভিড় না হওয়ায়া বাস চালকদের যাত্রী হচ্ছে না। ফি বছর বাস নিয়ে সাগর আইল্যান্ডে চলে আসেন চালক কন্ডাক্টররা। রমেশ চন্দ্র নামে এক কনডাক্টরের কথায়, ‘চার দিন আগে চলে আসলেও যাত্রী না থাকায় একটাও টিপ খাটেনি’। একি দৃশ্য মেলার মধ্যেও। দোকান বসেছে। পুজো দেবার ডালা থাকলেও ভিড় না হওয়ায় কপালে ভাঁজ বিক্রেতাদের। ক্যানিং থানার বৈকুন্ঠুপুর থেকে এসেছেন ৫২ বছর বয়সী উষা রানী নস্কর এবং তাঁর ৪৮ বছর বয়সের বোন নন্দি বালা নস্কর। স্বামী ও সংসারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে এসেছেন। ভিড় না থাকায় ফাঁকায় ফাঁকায় মন তৃপ্ত করে পুজো দিয়েছেন।