লোকাল ট্রেন চালুর প্রথম দিন স্বস্তি-অস্বস্তি দুইই পেল রেল যাত্রীরা
কল্যাণ অধিকারী
হাইলাইটস
❏ ট্রেনে ওঠার আগে প্ল্যাটফর্মে থার্মাল স্ক্রিনিং, ট্রেনেও স্যানিটাইজার করা হয়েছে।
❏ সন্ধের পর তিন জনের সিটে চারজন বসে গন্তব্যে পৌঁছালেন যাত্রীরা।
❏ মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় না থাকার অভিযোগ।
❏ ট্রেন চালু হতে পরিবহণ সমস্যা অনেকটাই মিটল মত যাত্রীদের।
লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু হতেই হাঁফ ছেড়েছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ ৭মাস গণ পরিবহণ নিয়ে নাজেহাল হতে হয়েছে। রুজি-রোজগার এর সন্ধানে প্রায় প্রতিদিন গুনতে হয়েছে অত্যধিক ভাড়া। বুধবার থেকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়েছে। স্বস্তি ফিরেছে আম-জনতার। তবে প্রথম দিন স্বস্তি-অস্বস্তি দুইই পেল রেল যাত্রীরা।
লকডাউন পরবর্তীতে বেসরকরারি ক্ষেত্রে রুজি-রোজগার খুইয়েছেন রাজ্য সহ দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ। করোনার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তারপরও ভীতি দূরে সরিয়ে মানুষ কাজে বের হচ্ছেন। ভিড় বাসে গা ঘেসাঘাসি করে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছেছে। রেলের কর্মীদের নিয়ে ফাঁকা স্টাফ স্পেশাল ট্রেন ছুটলেও তাতে সাধারণ মানুষের প্রবেশে ছিল মানা। দিন দশেক আগে, হাওড়া স্টেশনে যাত্রী বিক্ষোভ শুরু হতেই লাঠি হাতে তেড়ে আসেন রেল সুরক্ষা কর্মীরা। এরপরেই ধুন্ধুমার কান্ড ঘটে যায়। বিক্ষোভে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে স্টেশন। রাজ্য সরকার রেলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত হয় হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনে চালানো হবে লোকাল ট্রেন। সেইমতন বুধবার শুরু হয় লোকাল ট্রেন পরিষেবা। যাত্রীরা সিজন টিকিট বাড়িয়ে নিয়েছেন। বুধবার প্রথমদিন ট্রেনে পা রেখেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বহু রেল যাত্রী সহ সাধারণ মানুষ।
যাত্রীদের একাংশের কথায়, ট্রেনের সংখ্যা সকাল-সন্ধে বেশি থাকলেও বেলারদিকে ট্রেনের সংখ্যা কম। যাত্রীরা স্টেশনে দীর্ঘ সময় ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করেছেন। মানুষ মেট্রোতে চড়লে যে নিয়ম মানেন লোকাল ট্রেনে সেসব নিয়ম ভাঙেন। পুলিশের নজরদারি কঠোর হলে সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহার বাড়বে। আমতা-হাওড়া শাখায় সকাল ৮টা পাঁচ মিনিটের পর আর ট্রেন নেই। তারপর সেই বিকেল ৫টায় ট্রেন। এতটা বিরতি সমস্যার সৃষ্টি করছে। যাত্রীদের অন্য একাংশের বক্তব্য, সবে তো একদিন হল শুরু হয়েছে ট্রেন পরিষেবা। প্ল্যাটফর্মে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। ট্রেনেও স্যানিটাইজার করা হয়েছে। মানুষজনকে সচেতন হতে হবে। যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
স্বস্তির মাঝে অস্বস্তির কাঁটাও রয়েছে। মেট্রোর মতো একটা সিট ছেড়ে বসার নিয়ম থাকলেও বাস্তবে তা মানা হয়নি। বহুক্ষেত্রে তিন জনের আসনে চারজন বসে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। সকালের দিকে নজরদারি ছিল সাধারণ মানুষ মেনেছে নিয়ম। বেলা গড়াতেই নিয়ম দূরে সরিয়ে ঠাসা ভিড় ট্রেনে। মাস্ক না পড়েই ট্রেনে যাত্রা করেছেন বহু যাত্রী। সন্ধে নামতে ফিরতি পথে ভিড় ও নিয়ম ভাঙার চিত্র ছিল সর্বাত্মক। সব মিলিয়ে লোকাল ট্রেন চলাচলের প্রথম দিন স্বস্তি-অস্বস্তি দুইই পেল রেল যাত্রীরা।