‘সৌমিত্রর নামে সিঁদুর পরেছি, আগামী দিনেও সৌমিত্রকে স্বামী মানবো’ বিচ্ছেদের মাঝে স্বামীর প্রতি আনুগত্য সুজাতার
কল্যাণ অধিকারী
দুদিনের বঙ্গ সফর শেষ করে অমিত শাহ দিল্লি ফিরে গিয়েছেন। এবার তাঁর দলের সাংসদের স্ত্রী যোগদান করলেন তৃণমূলে। যোগদান করেই অভিযোগ আনলেন বিজেপিতে সন্মান-মর্যাদা নেই। যারা ঘামে ভিজে, রক্ত দিয়ে, জেল খেটে দলের দু’জন সাংসদ থেকে আঠারো জন সাংসদে পরিণত করল আজ তারাই দলের পিছনের সারিতে। যারা অন্য দল থেকে আসছে তারা পাচ্ছে প্রথম আসন সঙ্গে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা।
শনিবার অমিত শাহকে দাদা বলে দলবদল করে বিজপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার থেকেই কেন্দ্রীয় সুরক্ষা পেয়েছেন তিনি। কানাঘুষো চলছে যুব মোর্চার সভাপতি হতে চলেছেন শুভেন্দু! এই মুহূর্তে বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সোমবার তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় এবং কুনাল ঘোষের হাত ধরে তৃণমূলে গেলেন সেই সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী সুজাতা মন্ডল খাঁ। স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন না। আঙুল তুললেন দলের দিকে। সাংবাদিকের সামনে অকপট সুজাতা জানিয়ে দিলেন বিজেপিতে ৬জন মুখ্যমন্ত্রী এবং ১৩জন উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে। অর্থমন্ত্রী সহ বিভিন্ন মন্ত্রী পদে কতজন তার হিসেব নেই। বিজেপি এখন তৃণমূলের বি টিমে পরিণত। তাহলে বি টিমে কেন থাকব এ টিমে-ই থাকব।
তবে তাঁর তৃণমূলে যাওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বন্ধন ছিন্ন হবার পরিস্থিতি। সাংসদ স্বামী সৌমিত্র বিচ্ছেদের মামলা করতে চলেছেন কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন। এতেও দমতে রাজি নয় সুজাতা। তিনি জানান, একসঙ্গে দু’জনকে ভালবাসা যায়। সময় দেওয়া যায়। তিনি রাজনৈতিক কাজে দিনের পর দিন সময় দিতেন না। কই ভালবাসা তো কমেনি। পেশা পেশার জায়গায়, সংসার সংসারের জায়গায়। সুজাতার সঙ্গে ডিভোর্স দিলেও তোমার বিপদ যেন কোনদিন না হয় সেটাই চাইব। দু’জন মানুষ যদি দু’জনের প্রতি সম্মান করে তবে কখনোই ছেড়ে যায় না। সৌমিত্রর নামে সিঁদুর পরেছি। আগামী দিনেও সৌমিত্রকে স্বামী মানব। ওরি ভাল চাইব। ছত্রে ছত্রে স্বামীর প্রতি আনুগত্য। তারপরই তিনি বলেন কর্তব্য কি একতরফা হয় প্রশ্নটা রাখলেন।
শনিবার সব জল্পনায় দাঁড়ি ফেলে দিয়ে বিজেপিতে গিয়েছেন শুভেন্দু। হাতে হাত ধরে বসে থাকবে না তৃণমূল তা প্রমাণ করল সোমবার বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র ঘরনি সুজাতার। আগামীদিনে আরও দলবদলের ইঙ্গিত থাকছে জেলায় জেলায়। তবে দল বদলের কারণে স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদের মামলা তা একপ্রকার নজিরবিহীন। এই অবস্থায় আগামীতে কি হতে চলেছে বিজেপি সাংসদের তৃণমূল স্ত্রী সম্পর্ক সেই দিকেই নজর থাকবে।