উত্তরবঙ্গে মুশলপর্ব! চার দিনে পদত্যাগ ১১ বিজেপি নেতার
রাজন্যা নিউজ ব্যুরো
শিলিগুড়ির খড়িবাড়ির রানিগঞ্জ-বিন্নাবাড়ি মণ্ডলে বিজেপির অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। তার স্পষ্ট ছবি গত কয়েক দিনে একের পর এক পদাধিকারী পদত্যাগ। সূত্রে খবর, মণ্ডল সভাপতি রিনা মণ্ডলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অসন্তোষের জেরেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা। সঙ্গে এ খবরও মিলেছে, গত চার দিনে পদত্যাগ করেছেন মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক তাপস মাঝি, সহ-সম্পাদক নির্মল সরকার, সহ-সভাপতি বীরেন শিকদার, যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রাকেশ সিংহ, অঞ্চল সভাপতি মৃন্ময় রায়-সহ ১১ জন। সবাই তাঁদের পদত্যাগপত্রে ব্যক্তিগত কারণ দেখালেও দলের অন্দরের খবর, মণ্ডল সভাপতির সঙ্গে মতবিরোধই এই গণ ইস্তফার মূল কারণ। তবে পদত্যাগপত্রের ভাষাও প্রায় একই রকম হওয়ায় এটাও অনুমান করা হচ্ছে, সকলে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অভিযোগ, রানিগঞ্জ পানিশালী গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনার পরিকল্পনায় তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ সদস্যদের সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের অনুমতি না নিয়ে গোপনে বৈঠক করেছিলেন সভাপতি রিনা মণ্ডল। এই বিষয়টি ঘিরেই তৈরি হয় মূল বিতর্ক। এরপরই পদাধিকারীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে ফাটল ধরে। অভিযোগ, তিনি একক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, কর্মীদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করছেন না, এবং তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন। এই প্রসঙ্গে মণ্ডলের প্রাক্তন সভাপতি ভোলানাথ সিদ্ধা জানান, ‘এই মণ্ডলটি ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা এলাকায় বিজেপির সবচেয়ে শক্তিশালী এলাকা। ২০২১-এ এখানে ৫২টি বুথের মধ্যে ৫১টিতেই এগিয়ে ছিল বিজেপি।’ তবে এই ভাঙনে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, এই প্রভাব আগামী নির্বাচনে পড়তে পারে। এই প্রসঙ্গে ফাঁসিদেওয়ার বিজেপি বিধায়ক দুর্গা মুর্মু জানান, ‘বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।’ শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরুণ মণ্ডলও বলেন, ‘ইস্তফার খবর শুনেছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’
এদিকে সূত্রে এ খবরও মিলছে যে, জেলা কমিটি গঠনের পর থেকেই অন্দরে অসন্তোষের আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। অভিযোগ, সক্রিয় কর্মীদের বাদ দিয়ে অনেক অনুগত অথচ নিষ্ক্রিয় নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ আবার আগে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগেও বিতর্কিত। নতুন কমিটিতে হিন্দিভাষীদের উপযুক্ত জায়গা না দেওয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কিছু নেতা। শিলিগুড়ির প্রাক্তন মণ্ডল সাধারণ সম্পাদক দিলীপ সিং-সহ বেশ কয়েকজন নেতা দলীয় গ্রুপে ক্ষোভও প্রকাশ করেন। ফলে রানিগঞ্জ-বিন্নাবাড়ি মণ্ডলে নেতৃত্ব নিয়ে বঙ্গ বিজেপির সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ।