‘৬২-র যুদ্ধ অতীত, অনেক দূর এগিয়ে গেছে ভারত , বুঝে গেছে চিন

কল্যাণ অধিকারী

লালফৌজকে তাদের নীতিতেই সঠিক আঘাত হানছে ভারতীয় সেনা।
ভারত সফরে ‘অতুল্য ভারতের’ নমুনা প্রদর্শন করা হয়েছিল জিনপিংয়ের সামনে। দেশে ফিরে আট মাসের মধ্যে ভারতীয় সেনার সঙ্গে প্রথম সংঘর্ষ ঘটায় চিন।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর থেকেও আমেরিকার সঙ্গে সখ্যতা বাড়িয়েছেন মোদি।
ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে পাকিস্তানকেও লেলিয়ে দেবে চিন।
চিন যুদ্ধে জড়ালে দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে উত্তপ্ত আমেরিকা সেক্ষেত্রে সামরিক অভিযান করবে।

করোনা আবহে দীর্ঘ চার মাস ভারত ও চিন দুই দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় রাতের অন্ধকারে চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে চিন। ভারতীয় সেনা সঠিক সময়ে হামলা রুখে ড্রাগনকে কঠিন টক্কর দিচ্ছে। প্রতিবার ভারতীয় সেনা বুঝিয়ে দিচ্ছে ‘৬২-র যুদ্ধ অতীত, অনেক দূর এগিয়ে গেছে আজকের ভারত।

কমিউনিস্ট দেশ চিন বরাবর নিজেদের এলাকা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দেশ দখলের নীতি নিয়ে চলছে। আজ ভারতকে আক্রমণ করছে। একদিন পাকিস্তানকেও দখলে নেবার চেষ্টা করবে। বর্তমান সময়ে পাকিস্তান তাদের দেশে চিনকে ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’র মাধ্যমে বাণিজ্যের সুযোগ করে দিয়েছে। কোনভাবে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ওঠা-নামা হলে পাকিস্তানের অধিকাংশ অংশ নিজেদের বলে দাবি করবে চিন। যদিও এসব মানতে চায় নি আর্থিক সংকটে জেরবার পাকিস্তান। বিভিন্ন দেশ আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। চিন ছাড়া পাশে কেউ নেই। ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে চিন পাকিস্তানকেও লেলিয়ে দেবে। যুদ্ধ সেক্ষেত্রে ত্রিমুখী হবার সম্ভাবনা!

২৯ ও ৩০ আগস্ট রাতে প্যাংগং লেকের কাছে চিন আগ্রাসন ঘটায়। লালফৌজকে তাদের নীতিতেই ফেরত পাঠিয়ে সঠিক আঘাত হেনেছে ভারতীয় সেনা। ‘৬২-র যুদ্ধের পর ২০১৭ সালের ডোকলাম পরিস্থিতি নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভারত-চিনের সম্পর্ক। টানা ৭৩ দিন দুই দেশের মধ্যে চাপানউতোর থাকে। পরবর্তীকালে আলোচনার মাধ্যমেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ১১ অক্টোবর ২০১৯ ভারতে আসেন চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং। মহাবলীপুরমে চিরাচরিত সংস্কৃতির পাশাপাশি ‘অতুল্য ভারতের’ নমুনা প্রদর্শন করা হয়েছিল জিনপিংয়ের সামনে। দেশে ফিরে আট মাসের মধ্যে ভারতীয় সেনার সঙ্গে প্রথম সংঘর্ষ ঘটায় চিন। চলতি বছর ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার অতর্কিত হামলা। তারপর থেকেই চিনের মাটি দখলের চেষ্টা বুঝে যেতে শুরু করে ভারতীয় সেনা।

লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনা স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চাইলেও রাজি হয়নি চিনা ফৌজ। তবে সাম্প্রতিক চিনা হামলা যেভাবে প্রতিহত করেছে ভারতীয় সেনা, একটি বিষয় চিন বুঝেছে অনেক দূর এগিয়ে গেছে ভারত। ‘৬২-র তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং ‘২০-র ভারতের প্রধানমন্ত্রী অনেকটাই পরিবর্তন। তবে একটি বিষয় মিল রয়েছে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সঙ্গে সখ্যতা বাজায় রেখেছিল প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর। কিন্তু বর্তমান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর সঙ্গে সখ্যতা অনেকটাই বাড়িয়েছেন মোদি। চিনের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়ার মাঝেও একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ফলে চিনা আক্রমণ অনেকটাই নিমিয়ে দিয়েছে। চিন বুঝেছে ভারতীয় সেনাদের মনোবল রাফাল যুদ্ধবিমানের মতো চাঙ্গা ও আধুনিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *