শুভেন্দু’র মন্ত্রিত্ব ত্যাগ এরপরেই কি দলত্যাগ! অগ্রহায়ণে ভরা বসন্ত গেরুয়া শিবিরে
কল্যাণ অধিকারী
হাইলাইটস
❏ শুভেন্দু’র মন্ত্রিত্ব ত্যাগ একুশের ভোটের আগে বড়সড় চাপে মমতার জোড়াফুল
❏ সাত দিনের মধ্যে দিদির অনুগামী থেকে দাদার অনুগামী হতে চলেছেন শুভেন্দু!
❏ একুশের ভোটের আগে শুভেন্দু অধ্যায় কীভাবে মেটাবে প্রশ্ন ঘোরাঘুরি করছে দলের অন্দরে
রাজনীতির ওজন মেপে-ই মন্ত্রী পদে ইস্তুফা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আগামী পরিকল্পনা অনেক আগে থেকে হিসাব কষে নিয়েছেন রাজ্যের জনপ্রিয় এই নেতা। সবুজ ছেড়ে গেরুয়া তে যোগ দেওয়াও মোটামুটি দিনক্ষণ স্থির। সাত দিনের মধ্যে দিদির অনুগামী থেকে দাদার অনুগামী হতে চলেছেন শুভেন্দু!
শুক্রবার রাজ্যজুড়ে শীতল দিনের পূর্বাভাস ছিল। কুয়াশা মাখা দিনের মাঝেই টিভির পর্দায় রাজ্য রাজনীতির বিগ ব্রেকিং। নেত্রীকে চিঠি দিয়ে মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। একিসঙ্গে আলাপ-আলোচনা থেকে জল্পনা সবকিছু ফুলস্টপ দিয়ে দেন তিনি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা দাপুটে নেতার মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া অগ্রহায়ণে বসন্ত এনে দিয়েছে গেরুয়া শিবিরে। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে আসতে চাইলে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু আগামী পরিকল্পনা কি হতে চলেছে জানাননি শুভেন্দু। দিন সাতেকের মধ্যে দিল্লির বিমান ধরতে চলেছেন তিনি। অমিত শা’র হাত থেকে গেরুয়া পতাকা ধরে যোগ দেবেন বিজেপিতে এমনটাই সূত্রের খবর।
বৃহস্পতিতে এইচআরবিসির চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। এবার ২৪ঘন্টা কাটতে না কাটতেই দলকে বড়সড় ধাক্কা দিয়ে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন তিনি। এরপরেই কি দল থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি প্রশ্ন ঘুরছে সর্বত্র। এইচআরবিসির চেয়ারম্যানের পদে কল্যাণকে দায়িত্ব দেওয়া দলে তাঁর ওজন কমে এসেছে বুঝেছেন তরুণ তুর্কি নেতা। লোকসভা ভোটের পর থেকে জোড়াফুল শিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক দোদুল্যমান অবস্থায় পৌঁছেছে। দলের অনুষ্ঠানে গড় হাজির থাকেন তিনি। বৈঠকেও দেখা যেত না। উল্টে বিভিন্ন জেলায় দাদার অনুগামী লেখা ও শুভেন্দুর ছবি দেওয়া পোস্টার পরতে শুরু করে। যেটা দল ভালো চোখে নেয় নি। একিসঙ্গে নন্দীগ্রামে দলের উদ্যোগে শহিদ স্মরণের সভায় শুভেন্দুর অনুপস্থিত শুভেন্দু যে আর দলে থাকতে চাইছেন না প্রশ্ন তুলে দেয়।
দলে অভিষেকের সঙ্গে শুভেন্দুর ঠান্ডা লড়াই সর্বজনবিদিত। তার ওপর রয়েছে পিকের ভূমিকা। ক্রমশ জেলার রাজনীতিতে বেঁধে রাখার চেষ্টা হচ্ছিল শুভেন্দুকে। এমনটা দাদার অনুগামীদের বক্তব্য। দলে তাঁকে আগের সন্মান ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিল। পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দুর বাড়িতে পৌঁছে শেষ চেষ্টা করেছিলেন ভোট–কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। বাড়িতে তিনি না থাকলেও সাংসদ পিতা শিশির অধিকারীর সঙ্গে একপস্থ কথা সেরে ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। সূত্রের খবর, পিকে আসছেন জানতে পেরেই জেলার অনুষ্ঠানে চলে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। দলের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে নেত্রীর কথাতেই বৈঠকে বসেন সৌগত রায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। তাতেও যে চিঁড়ে ভেজেনি মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া থেকে স্পষ্ট।
একুশের ভোটে ক্ষমতায় ফিরতে মমতার পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিলিতভাবে লড়াই দেওয়াটা জরুরী। দলের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি। প্রবলভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বে তাঁরা। কিন্তু বছর শেষের দোরগোড়ায় সুখবর শোনার আগেই বিচ্ছেদের খবর এনে দিল জোড়াফুল শিবিরে। এরপরে দল ছাড়লে একুশের ভোটের আগে শুভেন্দু অধ্যায় কীভাবে মেটাবে প্রশ্ন ঘোরাঘুরি করছে দলের অন্দরে।