গ্রামীণ হাওড়ায় উদ্ধার হল লাইকোডন প্রজাতির সাপ, পরিবেশ কর্মীদের নজরদারিতে মিলছে সাফল্য
কল্যাণ অধিকারী
পরিবেশ কর্মীদের কঠোর নজরদারিতেই সাফল্য। গ্রামীণ হাওড়ার শ্যামপুর, আমতা, জয়পুর এলাকায় উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক বিষধর সাপ। পাশাপাশি উদ্ধার হচ্ছে পিকক সফটসেল কচ্ছপ। পরিবেশ কর্মীদের মাধ্যমে বন দফতরের মাধ্যমে সুস্থ পরিবেশে ছাড়া হচ্ছে।
সোমবার আমতার সোনামুই গ্রামে উদ্ধার হল হাওড়া জেলায় অতি বিরল লাইকোডন জাতীয় সাপের বাচ্চা। এটি উড়িষ্যায় আবিষ্কৃত হয়েছে। ছোট অবস্থায় এই সাপের গলার কাছটা সাদা দাগ থাকে। বড় হলে ঐ দাগ হলদেটে হয়। কিন্তু কীভাবে গ্রামীণ হাওড়ার আমতায় দেখা গেল এই প্রশ্ন পরিবেশ কর্মীদের মধ্যেও। দিন কয়েক আগে খসনান গ্রামে উদ্ধার হয়েছে পিকক সফটসেল কচ্ছপ। আমতা থানার খসনান গ্রামে অষ্টম শ্রেণির কিশোর সেখ আরমান এর বুদ্ধিমত্তায় দশটি বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ ছানা উদ্ধার হয়। পরিবেশ কর্মীদের কাছে নিয়ে গেলে কচ্ছপের পিঠের দাগ দেখেই চমকে যান পরিবেশ কর্মীরা। গ্রীন চেন মুভমেন্টের মাধ্যমে ঘটনাস্থলের পুকুরে ছাড়া হয়ে বাচ্চা কচ্ছপ গুলি। হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ বিষধর সাপ, বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ, বাঘরোল উদ্ধার করে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিচ্ছে। পরিবেশ মঞ্চের সম্পাদক শুভ্রদ্বীপ ঘোষ, সহ-সম্পাদক সম্রাট মন্ডলরা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার করছেন। রক্ষা পেতে শুরু করেছে বিপন্ন প্রাণী।
পরিবেশ কর্মী শিক্ষক প্রদীপ রঞ্জন রীত জানান, “উড়িষ্যার লাইকোডন জাতীয় সাপের বাচ্চা গ্রামীণ হাওড়ায় উদ্ধার হওয়া অবশ্যই বিষয়টি চাঞ্চল্যকর। আমরা ওই এলাকায় পৌঁছে সচেতনতার প্রচার করব। সাপের বাচ্চাটি আমাদের কাছে নিয়ে আসে সঞ্জীব সেনাপতি, সমীর সেনাপতি। ওদেরকে বলেছি এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর। সাপের বাচ্চাটি যেখানে উদ্ধার হয়েছে ওখানেই ছেড়ে দেওয়া হবে। বন দফতরের কর্মীদের সঙ্গে এ বিষয় কথা হয়েছে। সচেতনতা মূলক আলোচনা শিবির ওই এলাকায় করা হবে।”শ্যামপুর এলাকায় ওয়াল্ড লাইফ গ্রুপ তৈরি করে সাপ উদ্ধার করে বন দফতরের হাতে তুলে দিচ্ছেন সদস্যরা। অর্পণ দাস, অয়ন বর, সমীরণ সামন্ত ও অনিরুদ্ধরা এলাকায় ২৪ ঘন্টা নজরদারি চালাচ্ছে। কয়েকবছর ধরে জালে আটকে পড়া বা বাড়িতে চলে আসা সাপ, বাঘরোল উদ্ধার করছে ওরা। পাশাপাশি কচ্ছপ উদ্ধার করে বন দফতরের হাতেও তুলে দিচ্ছে। জয়পুরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দাও মানুষের পাশে দাঁড়াও গ্রুপের সদস্যরা এলাকায় সাপ,কচ্ছপ, পেঁচা উদ্ধার করে নজির গড়ে তুলেছে।
বন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘গ্রামীণ হাওড়ায় জলাভূমি ও বনাঞ্চল রয়েছে। এখানে বিষধর সাপ, বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ, বাঘরোল বিভিন্ন সময় উদ্ধার করছেন পরিবেশ কর্মীরা। এটা অবশ্যই পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য দিক। মানুষের মধ্যে সচেতনতার প্রচার করা হচ্ছে। এতে করেই সাফল্য আসতে শুরু করেছে’।