থানা ও বিডিওর একশো মিটারের মধ্যে প্রাচীন অশ্বত্থ গাছ কাটা হল, জানেন না ওসি, বিডিও, প্রধান
কল্যাণ অধিকারী
ইয়াস আছড়ে পড়ার আগে কাটা হয়েছিল প্রাচীন অশ্বত্থ গাছটির ডাল-পালা। তার ঠিক একমাসের মধ্যে আস্ত গাছটাই কেটে ফেলা হল। থানা ও বিডিওর একশো মিটারের মধ্যে প্রাচীন অশ্বত্থ গাছটি শুক্রবার কাটা হল চোখে পড়ল না বিডিও থেকে পুলিশ আধিকারিকদের। এমন ঘটনায় মানসিক ভাবে আহত হয়েছেন এলাকার দোকানদারদের একাংশ। প্রশাসনের ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জয়পুর থানার প্রবেশ পথে রাস্তার ধারে শতাব্দী প্রাচীন অশ্বত্থ গাছটি ছিল। থানায় কাজকর্মে আসা মানুষজনও গাছের ছাওয়ায় দাঁড়াতেন। মাসখানেক আগে ইয়াস-এর সতর্কতার জন্য গাছটির ডাল মুড়িয়ে কেটে দেওয়া হয়। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় তখন কেউ মুখ খোলেনি। এতদিন পর সবে নতুন ডালপালা গজাচ্ছিল এমন একটি সময় গাছটি দিনের বেলায় কেটে ফেলা হল। হতবাক স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পথচলতি মানুষ। কার নির্দেশে গাছটি কাটা হল কেউ জানতেই পারল না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোকানদারের কথায়, ‘এ যেন রক্ষকই ভক্ষক। প্রশাসন বারেবারে বলছে গাছ কাটার অর্থ হল জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনা। থানার ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে প্রাচীন অশ্বত্থ গাছটিকে টুকরো টুকরো করে কাটা হল। প্রশাসন কবে মানবিক হবে’!
গাছ কাটা কার নির্দেশে হল এ বিষয় জয়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অভিষেক রায়কে ফোন করা হলে তাঁর স্পষ্ট জবাব, ‘আমাদের তরফ থেকে কাটা হয়নি। ওটা থানার গাছ নয়। আমরা যেটুকু জানি গাছটি কিছুটা ভেঙে গিয়েছিল ঝড়ে’। গাছটির পাশ দিয়ে থানায় যেতে হয় কেন নজরে আসল না উত্তর মিলল না। আমতা-২ বিডিও মাসুদুর রহমানকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর যুক্তি ‘তিনি বিষয়টি জানেন না। খোঁজ নিয়ে দেখবেন’। প্রশ্ন হচ্ছে গাছটি কাটার পর খোঁজ নেবেন যুক্তি কতটা যুক্তিপূর্ণ! গাছটির অবস্থান রাস্তার গায়ে। তার কিছুটা দূরেই থানা। একশো মিটারের মধ্যে আমতা-২ ব্লক। এমন একটি জায়গায় প্রাচীণ অশ্বত্থ গাছ কাটা হল কারও নজরে আসল না কেন প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র। জয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুবাস বর জানান, ‘গাছ কাটার বিষয় তাঁর কিছুই জানা নেই। তবে গাছ বসানোর বদলে গাছ কাটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি’।
পরিবেশের ভারসাম্য রুখতে বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিকভাবে গাছ লাগানোর কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। তারমধ্যেই প্রাচীন গাছ কাটার অনুমোদন কার থেকে মিলল অজানা। দুপুর অবধি বৃক্ষ নিধন যজ্ঞ চলেছে। রাস্তার ধারে পরে রয়েছে মোটা মোটা ডাল। গাছটি কাটায় স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পথ চলতি মানুষ অনেকেই হাহুতাশ করছেন।