বন্যা বিপর্যস্ত আমতা-২ ব্লকে নতুন করে প্লাবিত একাধিক গ্রাম
কল্যাণ অধিকারী
টানা তিনদিন জল বাড়ার পর বৃহস্পতিবার কিছুটা হলেও স্বস্তি। প্রায় এক ফুট জল কমলো আমতা-২ ব্লকের সেহাগোড়ী এলাকায়। তবে সেহাগোড়ী-জয়পুর সড়ক এখনও জলের তলায়। সেহাগোড়ী কালীতলা এলাকায় প্রায় দেড় মানুষ সমান রাস্তায় জল। গ্রামের ভিতর দিকের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। নৌকা, ভেলায় করেই জল আনতে হচ্ছে। মিলছে না গবাদিপশুর খাদ্য। জলবাহিত রোগ বন্যার্তদের হচ্ছে এমনটাও জানা যাচ্ছে। জলমগ্ন আমতার ২ নং ব্লকের অমরাগড়ী বৃদ্ধাশ্রম। দ্ধাশ্রমে নীচের তলায় জলে ভাসছে আবাসিক মায়েদের বিছানা, আসবারপত্র। ২৩ জন আবাসিক মা কে নীচের তলা থেকে তোলা হয়েছে উপরের তলায়।
সেহাগোড়ী এলাকার পঁচাশি বছর বয়সী বৃদ্ধা নয়নতারা চক্রবর্তী বার্ধক্যজনিত কারণে বুধবার বিকেলে মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারটির বাড়ি ও গোটা এলাকা একতলা সমান জল হওয়ায় দেহ রাতভর বাড়িতেই থেকে যায়। বৃহস্পতিবার বেলায় থলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এনডিআরএফ টিম কে পাঠানো হয়। স্পিডবোর্ডে করে দেহ নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এলাকার সমস্ত শ্মশান জলের তলায়। ফলে মৃতদের দেহ সৎকারেরর জন্য বাউড়িয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই বিদ্যুতের চুল্লিতে দাহ করা হবে এমনটাই প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। বাকসি ক্যানেলে ভেসে যাচ্ছে গবাদি পশুর দেহ। অন্যদিকে রামপুর খাল দিয়ে কামারগোড়িয়া, সিরোল, নারিট, নওপাড়া, মহিষামুড়ি, গাজীপুর বেশকিছু নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নজরে রাখছে আমতা-২ ব্লক প্রশাসন।
বন্যার্তদের কথা ভেবে স্বাস্থ্য শিবির করা হয়েছে কুলিয়াতে। মূলত গ্রামবাসীদের জলবাহিত রোগ ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যই এই সমস্ত শিবির করা হয়েছে। আমতা-২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিন্দ সিকদার জানান, বন্যার্তদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে স্প্রিড বোডে করে চিতনান এলাকায় গ্রামের ভিতর পৌঁছে ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে। ডেপুটি সিএমওএইচ-২ ডঃ শুভাশিস দাস, মেডিক্যাল অফিসার ডঃ আবিস্কার রায় উপস্থিত থেকে সমস্তটা পরিচালনা করছেন। স্পিড বোডে বসেই চিকিৎসা করেন বন্যার্তদের। সেহাগোড়ী মোড়ের পাশে স্বাস্থ্য শিবির করা হয়েছে। রয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। গ্রামের মানুষজোন জলবাহিত রোগ মূলত হাজা, চুলকানি, ডাইরিয়া রোগের ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন এমনটাই জানান সবাস্থ্যকর্মীরা। প্রায় দেড়শো জোন গ্রামবাসী শিবিরে এসেছেন।