উদয়নারায়ণপুরের ৫১টি গ্রাম প্লাবিত, দুমাসের মধ্যে দু’বার বন্যায় অসহায় দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দারা
কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ
ধেয়ে আসছে লক্ষ-লক্ষ কিউসেক জল। হাতে সময় নেই বেশি। দ্রুত ঘর ছেড়ে অন্যত্র উঠে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। উদয়নারায়ণপুর থানার কুরচি শিবানিপুর সহ ৫১টি গ্রাম প্লাবিত। ভয়াবহ পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে হাজার-হাজার গ্রামবাসী। ইতিমধ্যে ৮০টি ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দশ হাজার গ্রামবাসীকে। উদ্ধারকার্যে ব্যবহার করা হচ্ছে ৪০টি নৌকা ও ৭টি স্পিডবোট।

কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি চলছে। তার উপরে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আসতে থাকে অশনি সংকেত। ডিভিসি ২লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে। এরপরেই বকপোতা, জঙ্গলপাড়া, সুলতানপুর, গজা সহ বিভিন্ন গ্রামের নিচু এলাকার বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে অন্যত্র উঠে যেতে থাকেন। শুক্রবার বিকেল তিনটে অবধি প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত। ২ কলম সেনা নামানো হয়েছে। রয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের আধিকারিকরা। মনসুকা, কানুপাট, সোনাতলা সহ একের পর এক গ্রাম ভাসিয়ে এগিয়ে চলেছে বন্যার জল। ঘোর বিপদের মধ্যেই শুক্রবার প্রায় ২লক্ষের কাছাকাছি জল ছেড়েছে ডিভিসি। সেই জল আসলে কি হবে বুঝে উঠতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। ডুবে গিয়েছে উদয়নারায়ণপুর হাসপাতাল। রোগীদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে শুক্রবার বিকেল একটানা বন্যা প্লাবিত এলাকায় বিধায়ক সমীর পাঁজা। এসেছেন হাওড়া জেলাশাসক মুক্তা আর্য। রয়েছেন উদয়নারায়ণপুর ব্লকের বিডিও।

আমতা-২ ব্লকের দ্বীপাঞ্চল ভাটোরা-চিতনান এলাকায় মুন্ডেশ্বরী নদীর জল হু হু করে ঢুকছে। একাধিক গ্রাম আবারও প্লাবিত। সকাল থেকেই গ্রামের মানুষজন রেশন দোকান থেকে রেশন নিতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছে। গ্রামবাসীদের রেশন নিতে যাতে কোনপ্রকার অসুবিধার মধ্যে না পড়তে হয় রেশন দোকানে সহায়তায় ছিলেন আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মিদ্যা। দু মাসে দু বার বন্যায় ডুবছে দ্বীপাঞ্চল। কিভাবে লড়াই চালাবে বুঝে উঠতে পারছে না বাসিন্দারা। আবারও জেলার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে ভাটোরা-চিতনান। সেহাগোড়ী-বাকসি ক্যানেল, রূপনারায়ণ, মুন্ডেশ্বরী নদী সর্বত্র পিডব্লিউডি আধিকারিকরা ঘুরছেন। আমতা বিধায়ক সুকান্ত পাল, আমতা-২ বিডিও মাসুদুর রহমান এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উদয়নারায়ণপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বন্যার জল এসে জমা হয় আমতা-২ ব্লক এলাকায়। ফলে আবারও আমতা-২ ব্লকের একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত হবার আশঙ্কা করছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। মাইকিং করে গ্রামবাসীদের সচেতন করে প্রচার চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমতা-২ ব্লকে বিধায়ক, বিডিও, ওসি, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, পঞ্চায়েত সমিতির আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক শমীক কুমার ঘোষ।
ছবি সংগৃহীত।