দেখে আসুন ‘আটচালায়’ প্রতিমা

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ

কোলাঘাট মুখি জাতীয় সড়ক ধরে আমাদের বাইক ছুটে চলেছে। মাইকে বাজছে হিন্দি-বাংলা গান। সেই সঙ্গে প্রকৃতির শীতল হাওয়া গায়ে মাখছি তখন। এরপর সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। দেখা মিলল আটচালায় প্রতিমা ও বেশকিছু মানুষের সঙ্গে। যা কিনা আপনার কল্পনার অপার সৌন্দর্য পৌঁছে দিয়েছে অন্য ঠিকানায়। এখানকার প্রতিমার জন্য বানানো হয় না বুর্জ খালিফা। কিন্তু মানতে অসুবিধে নেই শান্তি যেন এখানেই বিরাজ করে।

জাতীয় সড়ক ডান দিকে রেখে বামদিকের ঢালাই রাস্তা ধরে কিছুটা এগোতেই আটচালা। ওখানেই অধিষ্ঠিত সন্তানদের নিয়ে মা দুর্গা। কথাগুলো লিখতে যখন বসেছি ততক্ষণে নবমী রাত পার হতে চলেছে। না কোন মন খারাপ নয়। শহরে ঘুরে ঠাকুর দেখা মানুষের কাছে নতুন ঠিকানা তুলে দিতেই এই লেখা। বাইকে লম্বা ভ্রমণে ঠাকুর দেখার ইচ্ছে যাদের সবসময় তাদের জন্য এই ‘আটচালা’ মন ভালো করে দেবার জন্য অন্যতম।

১৬নং জাতীয় সড়ক ধরে বাগনান পৌঁছে যান। তারপর এগিয়ে চলুন দেউলটি অভিমুখে। বরুন্দার আগে এই আটচালার স্থান। চারিদিকে ঘরোয়া ছাপ স্পষ্ট। বড় মাপের পুজো প্যান্ডেলের থিম এখানে মিলবে না। কিন্তু আন্তরিকতায় টইটুম্বুর মানুষদের দেখা মিলবে। বাইক রেখে আটচালায় বসে পড়ুন। তাকিয়ে থাকুন মা দুর্গার দিকে। তার মধ্যেই আশপাশের দিকে চোখটা ঘুরিয়ে নেবেন দেখবেন বাড়ির মাসিমা-কাকিমা, অল্পবয়সী ছেলে-মেয়ে, কলেজপড়ুয়া সকলে মিলে পুজোর আনন্দে মেতে রয়েছেন। আপনাদের সঙ্গে গল্প করতেও কোন দ্বিধা নেই ওঁদের।

পুজোয় বড় বাজেট নয়। ঘরোয়া সাজগোছ। মাইকে বাজছে লতাদির কন্ঠে গাওয়া ‘সাত ভাই চম্পা জাগো রে জাগো রে ঘুম ঘুম থাকে না ঘুমেরই ঘোরে’। বেশ কিছুটা সময় একান্তে কাটান। বছরভর কাজ কাজ আর কাজ। যখন আর কিছুই ভালো লাগে না। এমন একটি সময়ে দুর্গা পুজো গ্লুকোজ দেয়। কদিন ধরে অনেকগুলো প্রতিমা দেখে ক্লান্ত বোধ করছেন। ইচ্ছে করছে বাইক নিয়ে বেড়িয়ে যেতে। এ বছর নাই-বা হলো পরের বছর চলে আসুন অষ্টমী বা নবমীতে। দুদন্ড সময় কাটিয়ে যান আটচালায়। মন শান্তি।

এরপর ফিরে আসুন জাতীয় সড়কে। অপরপ্রান্তে অর্থাৎ কলকাতা মুখি লেনের দিকে তাকালেই দেখতে পাবেন হোটেল অভিজিৎ। মনপসন্দ খাবারের অর্ডার দিয়ে দিন। দেখবেন রাতের খাওয়াটা জমবে খাসা। ওখানে কিন্তু বেশ কয়েকটি বড় মাপের পুজো হয়। যেমন নবাসন ইয়ং স্টার, বরুন্দা বিবেকানন্দ পল্লি সমিতি, আষাড়িয়া ঈশ্বরীপুর সবুজ সংঘ ইত্যাদি। দেখবেন কিন্তু মন ভরে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *