দুর্যোগের মেঘ সরতেই জমজমাট দার্জিলিং, মাস্ক ব্যবহারে অনিহা পর্যটকদের

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ

ইয়ে মোমো ৭০ রুপিয়া, দাম কম নেহি হোগা। মহিলার হালকা গড়ন সেই সঙ্গে খাটো চেহারা ম্যালের কিছুটা দূরে রাস্তার ধারে মোমো বিক্রি করছেন। গরমাগরম চিকেন মোমো সঙ্গে ঝাল চাটনি। চিকেনের পুর দিয়ে পুলি পিঠের আকারে চিকেন মোমো আমাদের মতন সন্ধের টিফিন করছেন কয়েকশো মানুষ। প্রত্যেকেই বলা যেতেই পারে মোমো প্রেমে মুগ্ধ।

প্রচন্ড চিন্তার মধ্যেই এবারের পাহাড় সফর। বাগডোগরায় বিকেল তিনটেয় নেমে, তারপর গাড়ি করে দার্জিলিং পৌঁছাতে রাত তখন ৯টা। রিসর্টে পৌঁছে ইচ্ছে করছিল না আর কিছু লিখতে। সকাল থেকেই কুয়াশা-মাখানো দার্জিলিং। রিসর্টের রুম থেকে জানালা খুললে ঢুকছে সাদা কুয়াশা। ছাতা মাথায় ম্যাল ঘুরে আর পরিচিত রেস্টুরেন্টে খেলেও দুপুরে সাজানো প্লেটে রিসর্টের খাবার। তবে বেলা গড়াতেই ছবিটা একেবারেই ভিন্ন। কুয়াশা কেটে অনেকটাই উজ্জ্বল চারিদিক। সূর্যের দেখা না গেলেও আবহাওয়া বদলাতেই মনটা খুশিতে ডগমগ।

দুর্যোগ অনেকটাই কেটেছে। তবে আমাদের আসতে হয়েছে মিরিক-নেপাল বর্ডার-পশুপতি বাজার হয়ে। রাতের কুয়াশা ভেজা পিচ্ছিল পথে গাড়ি চালক বেশ পোক্ত হাতে পৌঁছে দিয়েছে দার্জিলিং। তবে সমস্যায় যে পড়তে হয়নি তা নয়। দৃশ্যমান্যতা কম থাকায় বাগডোগরায় কোনো বিমান নামতে পারেনি। সকাল ৭টা পঁয়তাল্লিশ মিনিটের বিমান কলকাতা টেক অফ করল প্রায় পৌঁনে দুটো বাজে। বাগডোগরা আরও একঘন্টা পর পৌঁছাল। রিসর্ট থেকে পাঠানো গাড়ির চালকের অবস্থাও আমাদের মতন বিরক্তিকর। তারপরও মনটা খুশি হয়েছে পাহাড়ের মানুষের সঙ্গে মিশে, কথা বলে।

দার্জিলিং আসলে ইচ্ছে করে দেখতে রুম থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা। যদিও এখনো দেখা যায়নি। কিন্তু কুয়াশার ঘোমটা সরলেই রুপের কাঞ্চনজঙ্ঘা মুখ তুলে তাকাবে। যে রুপের মুগ্ধতায় ভরে যায় আসমুদ্রহিমাচল। রাজ্যপালের বাসভবনের কিছুটা দূরেই রয়েছি। এদিকের হোটেল ও রিসর্টে একটু বেশিই ভাড়া। কিন্তু আমোদপ্রিয় মানুষের কাছে দেখলাম তা কোন ব্যপার নয়। রুম হিটার, নরম বিছানা, গরম জল, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখবে রুম থেকেই ইত্যাদি ইত্যাদি।

পর্যটকদের যেভাবে ঢল নেমেছে প্রাণ খুঁজে পেয়েছে পর্যটন ব্যবসা। সেইসঙ্গে বিপদকেও। যেভাবে মানুষজন আসছেন শনিবার রাতে তো ম্যাল রোড জনপ্লাবন। বিকিকিনি চলছে দেদার। কিন্তু অধিকাংশ পর্যটকের মুখে মাস্ক নেই। তবে পাহাড়ের বাসিন্দারা মাস্ক ব্যবহার করছেন। হয়তোবা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে।

এরপর দ্বিতীয় পর্বে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *