বাগনানে ফিরে এল তিন অভিযাত্রীর দেহ, চোখের জলে বিদায় জানাল গ্রাম

কল্যাণ অধিকারী

উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিংয়ে গিয়ে নিখোঁজ থাকা বাগনানের তিন যুবকের দেহ ফিরে আসল ঠিকই, কিন্তু সবার চোখে জল দিয়ে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ মুরারীবাড় গ্রামে একে একে তিনটি দেহ এসে পৌঁছায়। দেহ গুলির গাড়ির সঙ্গেই অন্য গাড়িতে আসেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য। ছিলেন গ্রামীণ হাওড়ার পুলিশ সুপার সৌম্য রায় এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায়।

বৃহস্পতিবার সকালে শরিৎশেখর দাস (২৮), চন্দ্র শেখর দাস (৩০), সাগর দে (৩৩) মৃতদেহ এসে পৌঁছায় কলকাতা বিমানবন্দরে। এরপর বিমানবন্দের দেহ তুলে দেওয়া মৃতের আত্মীয়দের হাতে। গাড়িতে করে বাগনানের মুরারীবাড় গ্রামে পৌছায় তিন কফিনবন্দী নিথর দেহ। এই গ্রামের তিন যুবক চলতি মাসের ১০ তারিখ ট্রেকিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর জেলার কানাকাট পাশে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়ে অন্যান্য অভিযাত্রীদের সঙ্গে নিখোঁজ হয়ে পরেন। উদ্ধারে নামেন এসডিআরএফের টিম। এদিন দেহ গ্রামে আসতেই হতবাক হয়ে যায় পাড়া প্রতিবেশী। পাহাড় আর প্রকৃতি ছিল ওঁদের ধ্যানজ্ঞান। সেই পাহাড় কেড়ে নিল তিনটি প্রাণ। দেহ ফিরল কফিনবন্দী হয়ে। শরিতের চার বছরের সন্তান রয়েছে।  

শরিতের স্ত্রীর কথায়, প্রকৃতিকে খুব ভালবাসত। বলতাম ঝুঁকিপূর্ণ কিছু করনা। চার বছরের সন্তান রয়েছে। ওর দিকে তাকিয়েই তো আমরা থাকতাম।

বাগনান থেকেই সাগরের দেহ যায় আমতা থানার উদং গ্রামে। ওখানেই সাগরের বাড়ি। গোটা গ্রাম চলে এসেছিল সাগরদের বাড়িতে। চোখের জলে ভেঙে পড়েন মৃতের পরিবার-পরিজন। চোখের জল আটকাতে পারেনি। পড়াশোনা চালিয়ে যেতেই বাগনানে থাকতে শুরু করে। সেখান থেকেই শরিৎশেখর দাস ও চন্দ্র শেখর দাসের সহ অভিযাত্রী হয়ে ট্রকিং করতে গিয়েছিল উত্তরাখন্ডে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় সমস্ত স্বপ্ন বরফ ঢাকা করে দিল বলছেন পরিবার-পরিজনেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *