‘প্রিয় সুব্রতদা’কে নিয়ে কিছু স্মৃতি

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ

সুব্রতদা আগামীকাল পূণ্যস্নান এখনো অবধি কত পূর্ণার্থী এসেছেন গঙ্গাসাগরে? প্রশ্নটা শুনেই মাইক হাতে জবাব দশ লক্ষ! লট-৮ এবং বেনুবন পয়েন্টে অপেক্ষায় আছেন আরও কয়েক লক্ষাধিক মানুষ। সন্ধায় প্রেস মিটে সুব্রতদার মুখে এই কথা শুনে অভ্যস্ত গঙ্গাসাগর মেলার কভারে আসা সমস্ত সাংবাদিক।

সাগর মেলা অফিসে প্রেস কনফারেন্স করার সময় সকলের মাঝে থাকতেন তিনি। চোখে চশমা, ঠোঁটে মুচকি হাসি চেয়ারে বসে গঙ্গাসাগর মেলার প্রতিদিনের গড়পড়তা হিসেব তুলে ধরতেন সুব্রতদা। চারদিন মেলা অফিসে সন্ধ্যার প্রেস মিটে সমস্ত তথ্য নেওয়াই ছিল আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ছাড়াও বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা থাকলেও সকলের মধ্যমণি থাকতেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তারপর মেলা অফিসের বাইরে চেনা মানুষজনের প্রতি একগাল হেসে বলতেন, কী রে কেমন আছিস? কাজকর্ম ঠিকঠাক চলছে তো ?

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর যেন তৈরি করেই আসতেন। প্রশ্ন শেষ হবার আগেই উত্তর দিয়ে দিতেন। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে প্রশ্ন করলেও মাঝেমধ্যে জবাব দিয়ে দিতেন তিনি। বহুদিনের রাজনীতির লোক। জেলার পাশাপাশি সাগরের প্রতিটি তট ছিল চেনা। ভোরভোর কনকনে ঠান্ডায় সাদা শাল মুড়ি দিয়ে সাগর তটে ঘুরে দেখতেন। ইউপি, বিহার, রাজস্থান থেকে আসা মানুষদের সঙ্গে কথা বলতেন। কোন মানুষ স্বজনদের হারিয়ে ফেললে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিতেন। সুব্রতদা আর নেই। পরের বছর তাঁর দায়িত্ব পালন করবেন অন্যজন। কিন্তু সদাহাস্য বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে মিস করবে বহুজন।

গতকাল আকস্মিক প্রয়াণের খবর আসতেই তাঁর স্মৃতির সাগরে ডুব দিয়েছেন অনেকেই। আমিও কিছুটা তুলে ধরলাম।

যেখানেই থাকো ভালো থেকো সুব্রতদা।

ছবি সংগৃহীত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *