পড়াশোনা ছেড়ে হাতের কাজে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্র,বাড়ি পৌঁছে পড়াশোনার গুরুত্ব বোঝালেন শিক্ষারত্ন পুরস্কৃত শিক্ষক

কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ

গ্রামের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রটি স্কুলের পড়াশোনা চুকিয়ে হাতের কাজ শেখায় মন দিয়েছে। এ কথা কানোকান জানতে পেরে বাড়িতে পৌঁছে যান শিক্ষারত্ন পুরষ্কার পাওয়া আমতা সোনামুই সাবালয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার পাত্র। ছাত্রটির বাড়ির উঠোনে বসে কয়েক ঘন্টা ধরে শিক্ষার গুরুত্ব স্মরণ করান। শেষ পর্যন্ত কাজ শেখার বদলে পড়াশোনা করবে বলেই মনস্থির করেন ছাত্র। খুশি শিক্ষক মহাশয়।

আমতার মল্লগ্রামে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শুভাশিস বাগ নাম পরিবর্ত। করোনা ও লকডাউনের কারণে স্কুল দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। মানসিক ভাবে পিছিয়ে পড়ছিল ছাত্রটি। পাড়ার লোকজনের কাছ থেকেও শুনতে হতো বিভিন্ন গঞ্জনা। কেউ কেউ পড়াশোনা ছেড়ে হাতের কাজ শেখার পরামর্শ দেয়। কিছুটা মানসিক হতাশা থেকেই কাজ শিখবার পাঠ নিতে শুরু করে দেয়। এ কথা জানতে পেরেই ছাত্রটির বাড়িতে পৌঁছে যান অরুণ বাবু। পরিবারের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। পিতা একটি কারখানায় কাজ করেন। বাড়ির অর্থনৈতিক অবস্থাও স্বচ্ছল নয়। ছেলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হওয়ায় তার ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তা ছিল। এরপরেই পাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকে উপদেশ শুনে তারাও সম্মত হয়। পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কাজে যাবার চিন্তাভাবনা শুরু করে শুভাশিস। 

শিক্ষক অরুণ বাবু জানান, “ওর সঙ্গে কথা বলে অনেককটা হতাশার ছাপ লক্ষ্য করি। ওকে প্রথমে বোঝাই করোনা পরিস্থিতির বদল হবেই। আগামীদিন শিক্ষার প্রসার আরও ঘটবে। তাই পড়াশোনা চালিয়ে যেতেই হবে। কয়েক ঘন্টা কথাবার্তার শেষে ও রাজি হয় আবারও পড়াশোনা করবে। স্কুলে যাবে। ওর মুখে এ কথা শুনে তৃপ্ত হয়েছি।”

অভিভাবকরা শিক্ষক মহাশয়ের মানবিক ও সুন্দর প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। পরিবারের কথায়, শিক্ষক মহাশয়ের আর্শীবাদে আমার এই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুটি জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ওর পড়াশোনার পথে কোনকিছু বাধা না হতে পারে সব চেষ্টা চালাব। শিক্ষক মহাশয়ের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *