শিক্ষক দিবসে শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন আমতার সোনামুই সাবালয় প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণ বাবু

কল্যাণ অধিকারী

শিক্ষারত্ন পুরস্কারে ভূষিত হচ্ছেন সোনামুই সাবালয় প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার পাত্র।
২০০৮ সালে ১৭এপ্রিল সোনামুই সাবালয় প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন।
২০১২ সালে রাজ্যে নির্মল বিদ‍্যালয় পুরস্কার, ২০১৮ সালে শিশুমিত্র, ২০১৯-২০২০ সালে জেলা থেকে শিক্ষাসম্মান পুরস্কার পেয়েছে বিদ্যালয়।
ইতিহাসের প্রতি ভালোবাসা ছোটকাল থেকে। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বইগুলোর প্রতি তাঁর আগ্রহ বেশি।
যেদিন স্কুল খুলবে শিক্ষারত্ন পুরস্কার পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেব, জানান অরুণবাবু।

শনিবার শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাচ্ছেন আমতার সোনামুই সাবালয় প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার পাত্র। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দপ্তর এবছর পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে। শনিবার বেলা ১টায় জেলা শাসকের অফিস থেকে তাঁর হাতে তুলে দেবে ‘শিক্ষারত্ন পুরস্কার’।

জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে ১৭এপ্রিল সোনামুই সাবালয় প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন শিক্ষক অরুণ কুমার পাত্র। বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা তখন ৪২ জন। ছাত্রছাত্রীদের প্রতি দায়িত্ব পালন, পড়াশোনা শেখানো একজন শিক্ষকের আদর্শ। সেই কাজ কে পাথেয় করে ২০২০ সালে বিদ‍্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ‍্যা হয়েছে ১৩৪ জন। ছাত্রছাত্রীদের প্রতি সস্নেহ ও আন্তরিকতা অটুট। ছাত্র-ছাত্রীদের হইহই করতে দেখে সহানুভূতির ভূমিকা নিয়ে নিজে এগিয়ে এসে ছাত্র-ছাত্রীদের অভাব-অভিযোগ শোনেন গ্রামের স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ বাবু। বিদ্যালয়ের মান উন্নয়ন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এবার শিক্ষারত্ন পুরস্কারে ভূষিত করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই মুহূর্তে করোনা-আতঙ্কের আবহে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তারমধ্যেই স্কুলের প্রধানশিক্ষক শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাচ্ছেন খুশি স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক থেকে ছাত্রদের অভিভাবকরা।  

অরুণ বাবু বলেন, ব্ল্যাকবোর্ড আর চক-ডাস্টারের পাশাপাশি হাতে-কলমে বিভিন্ন মডেল তৈরি করেছে স্কুল। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা, পরিবেশ, বৃক্ষরোপন, মিড-ডে মিল, শিশুসংসদ, অরণ‍্যসপ্তাহ পালন, সামাজিক উৎসব পালন, খেলাধুলা সর্বদিক বিচার করে ২০১২ সালে নির্মল বিদ‍্যালয় পুরস্কার পায় সোনামুই সাবালয় প্রাথমিক বিদ‍্যালয়। ২০১৮ সালে রাজ‍্য থেকে শিশুমিত্র পুরস্কার এবং ২০১৯-২০২০ সালে জেলা থেকে শিক্ষাসম্মান পুরস্কার পেয়েছে। ২০২০ সালে ৫ সেপ্টেম্বর রাজ‍্য থেকে শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাচ্ছেন। খুশি তো লাগছে। এই আনন্দ টা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারতাম আরও বেশি খুশি হতাম।

আমতার মল্লগ্রামের বাসিন্দা অরুণ কুমার পাত্র ইতিহাসের প্রতি ভালোবাসা ছোটকাল থেকে। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বইগুলোর প্রতি তাঁর আগ্রহ বেশি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আবৃত্তি, বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য, খেলাধুলা, সামাজিক কাজকর্ম, দুস্থ মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো বরাবরের পছন্দের। অরুণবাবুর কাছে বড় পুরস্কার তাঁর সহকর্মী থেকে বিদ‍্যালয়ের পড়ুয়ারা। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রতিটি দিন মন টানে। এত বছর একাটানা শিক্ষকতা করেছেন। এইভাবে এতগুলো মাস বিদ‍্যালয়ের পড়ুয়াদের ছাড়া থাকতে হচ্ছে। তবে মাঝেমধ্যে স্কুলে যেতে হয় অভিভাবকদের হাতে মিড-ডে মিলের খাদ্রদ্রব্য তুলে দিতে। কিন্তু ব্ল্যাকবোর্ড আর চক-ডাস্টারের সঙ্গে বিদ‍্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে পড়ানোর ইচ্ছেটা বড্ড টানছে গ্রামের স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার পাত্রকে। যেদিন স্কুল খুলবে শিক্ষারত্ন পুরস্কার পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেব। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *