বিশ্বকাপের ফাইনাল বুঝিয়ে দিল এটাই ফুটবল!
কল্যাণ অধিকারী
ARG vs FRA গোওওওওওওললললল প্রথমার্ধেই ২-০ এগিয়ে আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি শটে জালে বল জড়ালেন মেসি। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্বিতীয় গোল হল দি মারিয়ার পায়ে। খুঁজেই পাওয়া গেল না ফ্রান্সকে। ফাইনালে প্রথমার্ধ ছিল এটাই। দ্বিতীয়ার্ধে আশি মিনিট অবধি লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল নীল-সাদা ব্রিগেড। তারপরের দু মিনিট বদলে গেল চিত্র। রাজকীয় মেজাজে দেখা গেল এমবাপেকে। তাঁর লড়াই ম্যাচ পৌঁছে দিল অতিরিক্ত মিনিটে। সেখান থেকে টাইব্রেকার। শ্বাস আটকে যাওয়া ফাইনাল দেখল বিশ্ব। বুঝিয়ে দিল এটাই ফুটবল।
৩৬ বছরের বিশ্বকাপ-খরা কাটিয়ে কাপ হাতে তোলা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা ছিল। তবে শেষ বাঁশি না বাজা অবধি অনেককিছু অপেক্ষা করে রয়েছে। ফুটবল সেকথাই বলে, রবিবার রাতে প্রমাণিত হল। প্রথমার্ধে থিমিয়ে থেকেও লড়াইয়ে ফিরতে মরিয়া ফ্রান্স শিবির। প্রথমার্ধেই জোড়া পরিবর্তন করা হয়। জিরু এবং দেম্বেলেকে তুলে নিয়ে চাপের খেলা শুরু। ব্যাকফুটে চলে যাওয়া ফ্রান্সকে খেলায় ফেরাতে দ্বিতীয়ার্ধে কতটা লড়াই দিতে পারে এমবাপেরা, সেই সঙ্গে গোল ব্যবধান কতটা বাড়িয়ে নেয় টিম আর্জেন্টিনা সে দিকেই চোখ ছিল সকলের। আশি মিনিট পরেই কামব্যাক করল ফ্রান্স। এমবাপের দুই আক্রমণ জটিল করে দিল মেসিদের জিত।
প্রথমার্ধে এভাবে কেন হারিয়ে গেল ফ্রান্স! কোথায় তাঁদের রক্ষণ! প্রথমার্ধে কার্যত দিশেহারা অবস্থা। অনেকেই ধরে নিয়েছিল হেলায় হারাবে ফ্রান্সকে। দেরিতে হলেও ম্যাচে ফিরে আসে ফ্রান্স শিবির। জ্বলে উঠলেন এমবাপে। দ্বিতীয়ার্ধের ৮১ মিনিটেই আর্জেন্টিনাকে মোক্ষম জবাব দিল ফ্রান্স বলা চলে এমবাপে। বহু আকাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপ ফাইনালে দু’মিনিটে দুই গোল দিয়ে শেষ বেলায় জ্বলে উঠলন এমবাপে। পেনাল্টি মেরে প্রথমে জালে বল পাঠিয়ে পালটা আঘাত শানালেন তিনি। তার একমিনিট পরেই আবারও গোল সেই সঙ্গে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে আনেন এমবাপে। ফাইনালে নামার আগে তরুণ যুবরাজকে ফ্রান্স সমর্থকেরা বাজি ধরেছিলেন। প্রথম নব্বই মিনিটে করেও দেখালেন তিনি। বলা চলে এমবাপের উপর নির্ভর করেই আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত মিনিটে।
অতিরিক্ত মিনিটে সপ্তম গোল মেসির পায়ে। আর্জেন্টিনার গোল হতেই ইতিহাস রচনা করা তখন ছিল কয়েক মুহুর্তের অপেক্ষা ! ম্যাচের প্রতি মুহূর্তে তখন অঘটনের ইতিউতি। পটকা ফাটানোর আওয়াজ কানে আসছে। ম্যাচ জিততে আর কয়েক মিনিটের অপেক্ষা। তখনি পেনাল্টি পেল ফ্রান্স। গোল করলেন সেই এমবাপে। স্কোর পৌছে গেল আর্জেন্টিনা ৩ ফ্রান্স ৩ । হ্যাটট্রিক করলেন এমবাপে। আর কি কি দেখা মিলবে ফাইনালে তখন অপেক্ষায় বিশ্ব। খেলা পৌঁছে গেছে টাইব্রেকারে। প্রথম শট মেরে গোল দিলেন এমবাপে। তারপরেই আসলেন মেসি। গোল দিলেন তিনি। এরপরেই অসাধারণ রুখলেন আর্জেন্টিনা গোলকিপার। পরের শটে গোল দিল আর্জেন্টিনা। এরপর বল বাইরে মারলো ফ্রান্স ফুটবলার। গোল করলেন আর্জেন্টিনা ফুটবলার, পরে গোল করলেন ফ্রান্স ফুটবলার। শেষ শটে গোল করলেন আর্জেন্টিনা ফুটবলার। স্টেডিয়াম জুড়ে চিৎকার বিশ্বকাপ চাম্পিয়ান আর্জেন্টিনা। এটাই অঘটনের বিশ্বকাপ। আর এটাই ফুটবল।