পথের পাঁচালী খ্যাতি ছড়িয়েছে পালসিট স্টেশনের
কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ
সালটা তখন ১৯৫৫। দিনটি ছিল ২৬ অগস্ট। কলকাতার পেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় বাংলা চলচ্চিত্র পথের পাঁচালী। কাশফুলের বনের ধার দিয়ে ধোঁয়া উড়িয়ে ছুটে যাচ্ছে ট্রেন। একি সঙ্গে অপু-দুর্গার ছেলেবেলা আজও বাঙালির কাছে নস্টালজিয়া। তবে পথের পাঁচালী সিনেমার মধ্য দিয়েই পরিচিতি ছড়ায় স্টেশন পালসিট। ওই সিনেমায় শুটিং হয়েছিল পূর্ব বধর্মান জেলার অধীনস্থ ছোট্ট স্টেশনটিতে। তারপর থেকেই মানুষের কাছে জনপ্রিয়তায় চলে এসেছে পালসিট স্টেশন।
ইতিহাসের হাত ধরে স্টেশনটি এখন পরিচিত। সময়ে অসময়ে অনেকেই এই স্টেশনটি দিয়ে যাতায়াত করেছেন। বর্ধমান মেন লাইনে যাতায়াত করা ট্রেন পালসিট ছুঁয়েই যাতায়াত করে। এক্সপ্রেস না থামলেও লোকাল ট্রেন দাঁড়ায়। হাওড়া থেকে দূরত্ব ৯০ কিমি। গ্রাম্য নিরিবিলি পরিবেশে একটা বিকেল বেশ কেটে যাবে। ট্রেনে না আসলে জাতীয় সড়ক ধরেও আসা যায়। স্টেশন থেকে খুব কাছ দিয়েই চলে গেছে জাতীয় সড়ক। স্টেশন ও সড়কের মাঝে জমিতে শরতে দেখা মেলে কাশফুল।
বিশ্ববরেণ্য পরিচালকের হাত ধরেই কালজয়ী বাংলা চলচ্চিত্র হয়ে বাঙালির হৃদয়ে স্থান পেয়েছে পথের পাঁচালী। শুটিং কীভাবে হবে, কাশফুলের দৃশ্য কোথা থেকে ভালো দেখানো যাবে তারজন্য ঘাম ছুটিয়েছেন পরিচালক। দিনের পর দিন পালসিটে কাটিয়েছেন সত্যজিৎ রায়। এমন বরেণ্য মানুষের ছোঁয়া পেতে বহু মানুষ পৌঁছে যান পালসিট। স্মৃতি খুঁজে দেখেন।
ছবি মুক্তির ৬৮ বছর পরেও বাঙালির কাছে আজও সমাদৃত পথের পাঁচালী। ইউটিউব এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এখনো চলচ্চিত্রটির খোঁজ করেন বহু মানুষ। ট্রেনের সেই কালজয়ী দৃশ্য দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। বিশ্ববরেণ্য পরিচালকের সৃষ্টি এভাবেই বাংলা ও বাঙালিকে মুগ্ধ করেছে। ঠিক তেমনি প্রচার পেয়েছে পালসিট। এক্সপ্রেস ট্রেনে শক্তিগড় পার করলেই অনেক যাত্রী জানালার দিকে উঁকি দেয়। খুঁজে পান পালসিট। মনে পড়ে পথের পাঁচালী।