গঙ্গাসাগরে কোটি মানুষের জমায়েত! জাতীয় মেলার দাবি তুললেন রাজ্যের ৮ মন্ত্রী
কল্যাণ অধিকারী, গঙ্গাসাগর
সাগর মেলাকে জাতীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি বহু বছর ধরে জানিয়ে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীকে শেষ চিঠি পাঠিয়েছেন গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন। সোমবার দুপুর তিনটে অবধি ১ কোটি মানুষের জমায়েত হয়েছে গঙ্গাসাগরে। তারপরেই সাংবাদিক সম্মেলন করে জাতীয় মেলার দাবি একযোগে করলেন রাজ্যের ৮মন্ত্রী।
রবিবার থেকে রাজ্যের ৮ মন্ত্রী সহ একাধিক বিধায়ক ও বিভিন্ন দপ্তরের সেক্রেটারী গঙ্গাসাগর মেলায় উপস্থিত রয়েছেন। সোমবার সাগরে স্নান সেরেছেন মন্ত্রী পুলক রায়, স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, সুজিত বোস ও শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও সাগরে স্নান সেরেছেন পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী মহারাজ। নিশ্চলানন্দজি রাম মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান নিয়ে মোদীর উপর বেজায় চটেছেন। গঙ্গাসাগরে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজ হাতে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন আর আমরা বসে বসে দেখব আর বাইরে বসে হাততালি দেব? নিরপেক্ষ সরকার মানে সমস্ত ঐতিহ্য এবং পরম্পরার জলাঞ্জলি দেওয়া নয়।”
জাতীয় মেলার দাবি কেন জানানো হচ্ছে বিস্তারিত বলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, গঙ্গাসাগর মেলা সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব মেলা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এক কোটির বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে! ভারতবর্ষে কেউ করে দেখাতে পারবে না। যিনি পারেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” শোভনদেব বাবু বলেন, কুম্ভ মেলায় তিনবার গেছি। কখনো এতো মানুষের জমায়েত দেখিনি। সাগর মেলায় সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার জন্য মানুষজন আন্তরিকতার সঙ্গে আসেন। পুণ্যার্থীদের যাতায়াত,পানীয়জল, সাগরে স্নান ও বাথরুম ব্যবহার কোনপ্রকার যাতে অসুবিধা না হয় সমস্ত বিষয় নজরে রাখেন দপ্তরের মন্ত্রীরা। হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক, সিভিক ও পুলিশ কর্মীরা সর্বদা ব্যস্ত থাকেন।”
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে সফল মেলা হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। গত বারের থেকে ২০ লক্ষ মানুষ বেশি এসেছেন। মেলায় কান পাতলেই বাংলা-হিন্দি সহ মোট সাতটি ভাষায় ঘোষণা চলছে। কোন পুণ্যার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লেই মুহূর্তে খবর পৌঁছে যাচ্ছে মেগা কন্ট্রোলরুমে। তারপরেই অ্যাম্বুলেন্স হাজির। অসুস্থ মানুষটিকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স। যা ভিন রাজ্যের মানুষদের মন ছুঁয়ে গিয়েছে। সোমবার উত্তরপ্রদেশের এক তীর্থযাত্রিকে এয়ারলিফট করে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বছর পঁয়ষট্টির ওই ব্যক্তির নাম রামসেবক। এবারের মেলায় মোট ৮জনকে এয়ার লিফট করে পাঠানো হয়েছে কলকাতায়। এছাড়া মেলায় আসার পথে মোট ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।