২০ ঘন্টা পরেও গঙ্গায় খোঁজ মেলেনি তলিয়ে যাওয়া হাওড়ার প্রৌঢ়ার!
কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ
সোমবার বিকেল অবধি প্রায় ২০ ঘন্টা অতিক্রান্ত এখনো খোঁজ নেই গঙ্গায় তলিয়া যাওয়া প্রৌঢ়ার! ভাইফোঁটায় মেয়ে-জামাই ও স্বামীর সঙ্গে মিলেনিয়াম পার্কে ঘুরতে গিয়েছিলেন। লঞ্চে করে মিলেনিয়াম পার্ক থেকে হাওড়া ফেরার পথে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। হাওড়া লঞ্চ ঘাটে জেটি ও লঞ্চের ফাঁক গলে গঙ্গায় তলিয়ে যান ওই প্রৌঢ়া। নিখোঁজের সন্ধানে তল্লাশীতে ডুবুরি নামানো হলেও খোঁজ মেলেনি। নিখোঁজ প্রৌঢ়ার নাম শেফালী কর, সাঁতরাগাছির বাসিন্দা। বয়স ৫৫।
চোখের সামনে দুর্ঘটনা ঘটায় কার্যত ভেঙে পড়েছেন ওই পরিবার। মেয়ে চৈতালী কর বলেন, রবিবার ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় মিলেনিয়াম পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাড়ি ফেরার সময় ঘটে গেল বিপত্তি। পর পর লঞ্চ দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু জেটির আগে শেষ লঞ্চের আগের দুটি লঞ্চের মধ্যে ফাঁকা ছিল। ওখান দিয়েই মা গলে যায়। মুহুর্তের মধ্যে আমরা লঞ্চের কর্মীদের সাহায্যের জন্য বলি। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসল না। বাবা ঝাঁপ দিয়ে খোঁজবার কথা বললে আমরা ধরে রাখি। চোখের সামনে মা কোথায় তলিয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারলাম না। কর্মীরা টাওয়ার ফেলে খোঁজ করলে হয়তোবা মাকে ফিরে পেতাম!
ঘটনার খবর পেয়ে হাওড়া লঞ্চ ঘাটে পৌঁছয় গোলাবাড়ি থানার পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ। সোমবার হাওড়ার ১ নম্বর জেটি যাত্রি পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। লঞ্চ নিয়ে তল্লাশি চলছে। বিকেল অবধি শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মহিলার খোঁজ মেলেনি। ওই মহিলার আত্মীয়-পরিজনেরাও এদিন লঞ্চ ঘাটে ছিলেন। হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির দায়িত্বে থাকা অজয় দে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘নিরাপত্তার জন্য জলসাথী কর্মীদের রাখা হয়েছে। তাঁদের কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে।’’
প্রৌঢ়ার স্বামীর আক্ষেপ, ঘটনার সময় দড়ি বা টাওয়ার ফেলে খোঁজ চালালে হয়তো খোঁজ মিলত। আমরা অত্যন্ত চিন্তায় রয়েছি। জলজ্যান্ত মানুষটি সকলের সঙ্গে পার্কে কত আনন্দ করল। তারপর বাড়ি ফেরার পথে লঞ্চে নামার সময় অতটা ফাঁক থাকায় গলে যায়। এমন গাফিলতির দায় কে বা কারা নেবে?