একটানা মেঘলা আকাশ, ঝিরঝিরে বৃষ্টি ভেজা জমিতে ঝিমোচ্ছে আলুর চারাগাছ চিন্তার ভাঁজ চাষিদের কপালে
কল্যাণ অধিকারী
অসময়ের বৃষ্টি ও সকালের কুয়াশার কারণে আলু চাষীদের মাথায় হাত! ধার-দেনা করে বীজ সার প্রভৃতি কিনে, বহু পরিশ্রম করে জমিতে সবেমাত্র আলুবীজ বসিয়েছেন। কিন্তু টানা তিনদিন আকাশে রোদের দেখা নেই। ভেজা মাটি ফলে কি হবে, এই চিন্তাতেই ঘুম উড়েছে গ্রামীণ হাওড়ার কৃষকদের।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, উদয়নারায়ণপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় আলু চাষ হয়। এই মরশুমে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। পোখরাজ আলু, জ্যোতি এবং চন্দ্রমুখী এই তিন ধরনের উৎকৃষ্ট মানের আলু উদয়নারায়ণপুর থেকে রাজ্য ছাড়িয়ে দেশে পৌঁছায়। কিন্তু বন্যা পরবর্তী সময়ে কৃষকদের আর্থিক দুর্দশা করুন। ধান চাষ হয়নি। আলু চাষ শুরু হলেও আকাশে রোদের দেখা নেই আলু গাছ ঝিমিয়ে পড়তে পারে।
উদয়নারায়ণপুর শিবানীপুরের কৃষক অষ্ট মান্না বলেন, এখানকার কৃষকরা কিছুটা আগে আলুচাষ শুরু করে দেন। এর দুই উদ্দেশ্য, আলুতে পোকা কম ধরে ও দাম ভালো মেলে। কিন্তু দুর্যোগের কারণে রোদের দেখা নেই। জমি ভিজে। এভাবে চলতে থাকলে আলু গাছ মরে যাবে। ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় আলু গাছ ঝিমিয়ে যাচ্ছে। বন্যার কারণে মাঠের ধান মাঠেই নষ্ট হয়েছে। মাঠ থেকে ধান তুলতে হয়নি কৃষকদের। আলু চাষ মার খেলে চাষিরা আর্থিকভাবে চরম সমস্যায় পড়বে। জয়পুরের কৃষক প্রবাল রীত বলেন, আলু চাষ দেরি হচ্ছে কারণ বন্যার পর জমি আবারও চাষযোগ্য করতে সময় লাগছে। জানুয়ারি মাসের মধ্যে আলু বসানো সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তবে যেসব জায়গায় বন্যা হয়নি ওই সমস্ত এলাকায় আলু গাছ প্রায় আট ইঞ্চি লম্বা হয়ে গেছে। মাটি ভেজা থাকলে ওই সমস্ত গাছ মরে যেতে পারে। এখন দেখার ঝলমলে আকাশ কবে দেখা যায়।
উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা কৃষকদের পাশে সর্বদা থাকেন। তিনিও এলাকায় পরিদর্শন করেছেন। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়া করন দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ রায় জেলার বাসিন্দা। কৃষকদের প্রতি সরকার সবসময় অবগত। আলু চাষিদের নিয়ে সরকার সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে। আলুর দাম কমানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী সচেষ্ট।