শিবপুরের ফ্ল্যাটে মা ও সন্তানের রহস্য মৃত্যু তদন্তে বড়সড় তথ্য পুলিশের হাতে

কল্যাণ অধিকারী

শিবপুরের ফ্লাটে মা ও সন্তানের রোমহর্ষক মৃত্যুর তদন্তে নেমে কয়েকঘন্টার মধ্যেই বড়সড় তথ্য পুলিশের হাতে উঠে আসলো। ঘটনার তদন্তে নেমে দুটি বিষয় তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছিল। পারিবারিক এবং দাম্পত্য অশান্তি। তার সূত্রপাত হতে পারে আর্থিক সমস্যা থেকে। বহুতলে মা ও সন্তানের মৃত্যু রহস্যের অন্তরালে এই দুই কারণ রয়েছে!

তদন্তে নেমে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে আর্থিক সমস্যায় জেরবার ছিল পরিবার এমন তথ্য উঠে এসেছে। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, পুলিশ কর্মী প্রদীপ ঝাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই ফ্ল্যাট বিক্রি করার তথ্য সামনে এসেছে পুলিশের। স্বামী ফ্ল্যাট বিক্রি করবেন শোনার পর থেকেই অশান্তি শুরু করেন স্ত্রী। সন্তানদের নিয়ে কোথায় গিয়ে উঠবেন এসবের চিন্তায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। এই কারণে দুই সন্তানকে হয়তো খাবারে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন!

ক’দিন বাদেই বছরের শেষ। নতুন বছরের প্রস্তুতি নিচ্ছে শিবপুর ব্যাতাইতলা এলাকা। তার আগেই মা ও সন্তানের মৃত্যু ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে শোরগোল পড়েছে। স্থানীয় একটি সূত্র বলছে, পরিবারের একমাত্র রোজগেরে প্রদীপ পুলিশে চাকরি পাবার আগে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসায় খরচ করেছেন কয়েক লক্ষ টাকা। সমস্ত টাকা দেনা করেই। পাওনাদারদের চাপে পড়েই ফ্ল্যাট বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় প্রদীপ। রেজেস্ট্রিও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সমস্তটা জানতে পেরে মুষড়ে পড়েন রুবি ঝা। নিরুপায় হয়ে বাপের বাড়ীতেও বিষয়টি জানিয়েছিল। কিন্তু সাহায্য মেলেনি। স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে দাম্পত্য অশান্তি চরমে ওঠে। তারপরেই কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়। চিকিৎসকদের চেষ্টায় এক ছেলে বেঁচে গেলেও রুবি ও তাঁর বড় ছেলের মৃত্যু হয়েছে।

প্রদীপ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্ত্রী এতবড় কান্ড ঘটাবেন দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি। সব শেষ হয়ে গেল। প্রদীপের অভিযোগ শাশুড়ির কাছে ফ্ল্যাট কেনার টাকাও চেয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকেও আশাব্যঞ্জক কিছু মেলেনি। উল্টে অপমান করা হয়। যা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করেছিল। শুক্রবার ফ্ল্যাটে ফিরে দরজা বন্ধ দেখি। ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি। বিপদ আঁচ করে খবর দেওয়া হয় থানায়। তারপরেই সব স্পষ্ট হয়।

হাওড়া পুলিশ কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠি বলেন, “একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত চলছে সমস্তটা সামনে আসবে। উনি আর্থিক সমস্যায় ছিলেন তা জানা গেছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *