শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিল, কোর্টের রায়ে বিজেপি বৈমাতৃসুলভ আচরণের একটা প্রতিফলন দেখছেন অভিষেক

কল্যাণ অধিকারী

যোগ্য-অযোগ্য শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের চাকরিহারা নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টকে সম্মান করি, মর্যাদা দিই কিন্তু চাকরি যেভাবে কেড়ে নেওয়া হল, তাতে কোথাও যেন আমার মনে হচ্ছে, ভারতীয় জনতা পার্টির বৈমাতৃসুলভ আচরণের একটা প্রতিফলন দেখতে পেয়েছি।

শনিবার সোদপুরের জগন্নাথ গুপ্ত ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটলের উদ্বোধনে আসেন অভিষেক। এখানে চিকিৎসকদের করোনাকালে চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন। তবে বক্তব্যের মিনিট দশেক পরেই চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে কোর্টের রায়কে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। অভিষেক বলেন, এসএসসি নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের যে রায় দিয়েছে কোথাও যেন ভারতীয় জনতা পার্টির বৈমাতৃসুলভ আচরণের একটা প্রতিফলন দেখতে পেয়েছি। আমরা সুপ্রিম কোর্টকে সম্মান করি, মর্যাদা জানাই। আমরা সুপ্রিম কোর্টকে বিশ্বাস করি। যে বিচার ব্যবস্থা এখনো মাথানত করেনি। এবং বিচারব্যবস্থা নিরপেক্ষ। কিন্তু কোন রায় আমার যদি পছন্দ না হয়, সেই রায়কে সমালোচনা করা ভারতবর্ষের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে দিয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে আমার কোথাও যেন মনে হচ্ছে, ভারতীয় জনতা পার্টির যে বৈমাতৃক সুলভ আচরণ এবং বাংলার মানুষের প্রতি ধারাবাহিক বৈমাতৃক সুলভ আচরণ এবং মানসিকতার তার প্রতিফলন আমরা দেখতে পেয়েছি।

এরপর তিনি বলেন, যদি অযোগ্য কেউ চাকরি পেয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হোক। তার বিরুদ্ধে তদন্ত হোক, তাঁকে শ্রীঘরে পাঠান। তাঁর চাকরি যাক। টাকা ফিরত করান। কিন্তু কিছু অযোগ্যর জন্য ১৬-১৭ হাজার যোগ্য শিক্ষকের চাকরি কেড়ে নিতে পারেন না। এরপর তিনি বলেন, আপনি দেখুন প্রায় ৫৯ লক্ষ জবকার্ড হোল্ডার তাঁদের মধ্যে ১০-১৫ জন ভুল করেছে, তারজন্য ৬০ লক্ষ গরিব মানুষের টাকা বন্ধ। অন্যদিকে দেখুন বাড়ির ক্ষেত্রে, কোথাও কোন যদি অভিযোগ এসেছে, তৎক্ষণাৎ তদন্ত করেছে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। দু চারজন কি একশো ধরুন এক হাজার জন ভুল করে থাকে, তারজন্য সতেরো লক্ষ মানুষের বাড়ি আটকে রাখতে পারেন না। দোষী বানানো যায় না। এটা ন্যায়সঙ্গত নয়।

তিনি আরও বলেন, পাঁচ বছর, ছয়-সাত বছর ধরে ইডি, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। লোয়ার কোর্ট থেকে হাইকোর্ট, হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট। সিবিআই আমার কাঁচকলা করেছি, আগামীদিনে আমার কাঁচকলা করবে। মূর্শিদাবাদ নিয়ে তিনি বলেন, এলাকার শান্তি, শৃঙ্খলা এবং সম্প্রীতি বজায় রাখতে সজাগ থাকতে হবে। আমরা শান্তি সম্প্রীতি রক্ষা করে বদ্ধপরিকর। সমাজে কয়েকজন উস্কানিমূলক কাজ করছে। আমরা ব্যবস্থা নেব। এরা বিগত দিনেও চেষ্টা করেছে গরীব মানুষের টাকা আটকে রাখতে। আর এখন অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা বাংলায় সম্প্রীতি রক্ষার কাজ করে যাব। মনে রাখবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের পাশে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *