হাজার বছর পরে সমুদ্রতীরে জগন্নাথ ধাম, উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী

কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ

ঘড়ির কাঁটায় ৩টা বেজে ১০ মিনিট দিঘায় জগন্নাথ ধামের দ্বারোদঘাটন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর সঙ্গেই সমুদ্র সৈকত শহর দিঘা পেল এক নতুন ধাম জগন্নাথ ধাম। তিন বছরের শ্রম দিয়ে যারা নির্মাণ করলেন এই ধাম তাঁদের অভিনন্দন জানাতে ভুললেন না মমতা। প্রত্যেক সংস্থার নাম উল্লেখ করে তাঁদের উষ্ণ অভিনন্দন দিলেন। তারপর ইসকন থেকে পুরীর মন্দিরের পুরোহিত প্রত্যেককে কৃতজ্ঞতা জানালেন।

রাধারমণ দাস যেমনটা জানিয়েছিলেন, পুরীর নিয়ম মেনেই প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে। তার পর জগন্নাথের স্নান এবং বস্ত্র পরিধানের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়। তার পর ৫৬ রকমের ভোগ নিবেদন করা হয় জগন্নাথের উদ্দেশে। দুপুর তিনটে বাজতে ১০ মিনিট বাকি রূপনকরের গান শেষ হতেই মাইক হাতে নেন মমতা। মিনিট দশেকের বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। দুপুর ৩টে বেজে পাঁচ মিনিট থেকে শুভ সময়। সেই সময় মেনেই মন্দিরের দ্বারোদঘাটন করেন মমতা। সেই সঙ্গে সমুদ্রের পাশাপাশি এবার দিঘা পেল জগন্নাথ মন্দির। বছরভর আসা পর্যটকদের কাছে যা অবশ্যই বাড়তি একটা পাওনা।

বুধবার মন্দিরের উদ্বোধনে মন্দির চত্বর ছিল চাঁদের হাট। রাজ্যের শাসকদলের একাধিক দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। পাশাপাশি ছিলেন একাধিক বিধায়ক। টলিউড শিল্পী ও সঙ্গীত জগতের একাধিক দিকপাল। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিধায়ক শিল্পী অদিতি মুন্সী। তারপর নচিকেতা, জিৎ গাঙ্গুলী, রূপঙ্কর, বন্দোপাধ্যায় সহ অনেকে। এদিনের অনুষ্ঠানের শাসকদলের বহুনেতা, নেত্রীদেরও আমন্ত্রণ স্থানে দেখা মিলেছে। সোমবার থেকে বিভিন্ন সাজসজ্জায় নজর কেরেছেন মদন মিত্র। এদিনো ব্যতিক্রম হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর পাশে সর্বদা ছিলেন অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু। ছিলেন প্রসেনজিৎ, দেব, ডোনা গাঙ্গুলী।

মুখ্যমন্ত্রী যেমনটা জানিয়েছিলেন, নবনির্মিত এই মন্দিরের পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন ইসকনকে। দুপুরে মন্দিরের দ্বারোদঘাটনের পর বিকেলে সাধারণের জন্য গেট খুলে দেওয়া হবে। এদিন উদ্বোধন উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় মানুষ এসেছিলেন। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন এসেছিলেন দিঘায়। অনুষ্ঠান শেষে বহু মানুষ মেন গেটের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। গেট খুলতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কয়েকজন ছিটকে পড়েও যান। তবে সমস্তটা সামাল দেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। তবে অনুষ্ঠান শেষে দিলীপ ঘোষ পৌঁছাতেই হৈচৈ পড়ে যায়। তৃণমূলের নেতা-নেত্রীর মধ্যে উৎসাহ নজরে আসে। জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছিল সরকার। অতিথিদের সামনে এলইডি স্ক্রিন। গরমের জন্য গামছা, পানীয়জল, ভেজানো ছোলা। এমনকি পোশাদের ব্যবস্থাও ছিল। মন্দিরের কারুকার্য ও জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা কে দেখে মন ছুঁয়েছে সকলের।

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার লাইন উদ্ধৃত করে বলেন, ‘সবারে করি আহ্বান’। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ বাড়ি বাড়ি পৌঁছাবে সরকার এটাও জানিয়েছেন৷ তিনি এও বলেন, হাজার-হাজার বছর তীর্থস্থান ও পর্যটনস্থল হিসেবে উন্মাদনার প্লাবন তৈরি করবে দিঘার জগন্নাথ মন্দির। যা শুনে হাততালির রোল ওঠে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *