রবিবার পর্যন্ত দক্ষিণে চলবে বৃষ্টি, উত্তরেও সতর্কবার্তা ৭০ হাজার জল ছাড়ল ডিভিসি
দীপিকা অধিকারী, রাজন্যা নিউজ
পুজোর আমেজ কাটতে না কাটতেই ঘোর বিপদের সম্মুখীন দক্ষিণবঙ্গ। অতি গভীর নিম্নচাপের জেরে দশমি থেকে দক্ষিণের একাধিক জেলায় লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। রবিবার পর্যন্ত দক্ষিণে বৃষ্টি চলবে বলে জানা যাচ্ছে। এরমধ্যেই শুক্রবার ডিভিসি জল ছাড়ল ৭০ হাজার কিউসেক। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকা মানুষের কার্যত ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে মস্ত বিপদ। নতুন করে বন্যার আশঙ্কায় লাখো মানুষ।
শুক্রবার একাদশি সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। কোথাও ভারী আবার কোথাও মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে জেলায় জেলায়। ফলে এমন পরিস্থিতিতে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানোয় বাড়ছে বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে জল ছাড়ছে বরাকর ও দামোদরের ওপর থাকা ঝাড়খণ্ডের তিনটি ড্যাম। ঝাড়খণ্ডের তিলাইয়া, তেনুঘাট ও কোনার ড্যাম জল ছাড়ায় চাপ বাড়ছে মাইথন ও পাঞ্চেতে। মাইথন ও পাঞ্চেত দুটি ড্যামের বিপদজনক লেভেল পৌঁছে গিয়েছে জলস্তর। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির জেরে তেনুঘাট সহ মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। ফলে দামোদর নদে জলস্তর অনেকটাই বেড়ে গেছে। দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ মাইথন থেকে ৪২ হাজার ৫০০ কিউসেক, ও পাঞ্চেত থেকে ২৭ হাজার ৫০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারাজে এদিন সকাল সাতটা থেকে ৫৯ হাজার ৭৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।
শুধু যে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হবে তা নয়, উত্তরবঙ্গের পর্যটকদের জন্য বড় সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ-সিকিমে আগামী ৩ দিন অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, একাদশী থেকে ত্রয়োদশী পর্যন্ত পাহাড় ও ডুয়ার্সে প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা। দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিমে ধস নামতে পারে। পাহাড়ি নদীতে আচমকা হড়পা বানের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সিকিম, ভুটানের জলে বিপদ আরও বাড়তে পারে।
জল ছাড়া নিয়ে ডিভিসিকে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশাল মিডিয়ায় মমতা এদিন লেখেন, তবিজয়া দশমী মানে দুর্গাপুজোর শেষ। আনন্দ, উল্লাস এবং নতুন আশার সময়। শান্তিপূর্ণভাবে বাংলাবাসীকে উৎসব উদযাপন করতে দেয়নি ডিভিলি। কারণ, রাজ্যকে নোটিস না দিয়ে ৬৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে তারা। উৎসবের সময় ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্দশার পরিস্থিতি তৈরি করা ছাড়া আর কিছু নয়। এই ধরনের আচরণ লজ্জাজনক। এবং অবশ্যই অগ্রহণীয়। কাউকে না জানিয়ে জল ছাড়ার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে ডিভিসি। এটা কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়। এটা ডিভিসির দ্বারা তৈরি করা বিপর্যয়।