বোরকা পরা ভোটার নিয়ে চিন্তায় বিজেপি, বিহারে এক দফায় ভোট দাবি
রাজন্যা নিউজ ব্যুরো
বিহার বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে বিজেপির কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও চওড়া হচ্ছে। বিহারে রাহুল গান্ধি ‘ভোট চোর গদ্দি ছোড়’ শ্লোগান তুলে যেভাবে ঝড় তুলে দিয়েছেন তাতে বিহারে ক্ষমতা ধরে রাখা বিজেপির কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। রাহুলের পদযাত্রায় আট থেকে আশি প্রত্যক বয়সের মানুষ রাহুলের সভায় যেভাবে জড়ো হচ্ছেন তাতে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে নীতীশ এবং তাঁর সহযোগীদের। এমন পরিস্থিতিতে বিজেপির ক্ষেত্রে গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়েছে মুসলিম ভোট। আর সেই কারণেই বিহার ভোটের সময় বোরকা পরা ভোটার নিয়ে চিন্তায় বিজেপি নেতৃত্ব।
বিহারে এক অথবা দুই দফায় ভোট চাইল রাজ্য বিজেপি। শনিবার পাটনায় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের কাছে বিজেপির প্রতিনিধি দল আরো দাবি জানিয়েছে বুথে বোরকা পরা ভোটারদের উপর বিশেষ নজরদারি চালাতে হবে। দলের দাবি বোরখা পরা ভোটারের মুখের সঙ্গে সচিত্র ভোটার পরিচয় পত্র বা এপিক মিলিয়ে দেখা বাধ্যতামূলক করুক কমিশন।
বিহার বিজেপি সভাপতি দিলীপ জয়সওয়ালের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল সফররত কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে শনিবার বৈঠক করে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের নেতৃত্বে তিন কমিশনার এবং বিহারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপমুখ্য নির্বাচন কমিশনার শুক্রবার বিকালে পাটনা পৌঁছেছেন। শনিবার সকাল থেকে তারা দফায় দফায় রাজ্যের স্বীকৃত বারটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
বিহারে গতবার অর্থাৎ ২০২০ সালের বিধানসভা ভোট হয়েছিল পাঁচ দফায়। রাজ্যের শাসক জোটের বড় শরিক বিজেপি এবার চাইছে ভোট হোক এক বা দুই দফায়। বিজেপি নেতৃত্ব সরকারিভাবে এর কারণ ব্যাখ্যা না করলেও দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, দুষ্কৃতীদের তৎপরতা আটকাতেই দল এই প্রস্তাব দিয়েছে। পার্টি মনে করে একাধিক দফায় ভোট হলে অপরাধীরা প্রত্যেক দফাতেই নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করবে। বিজেপির অভিযোগ, আরজেডি’র হার্মাদদের সঙ্গে পুলিশ ও আধা সেনা পেরে ওঠে না। তাই কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সর্বোচ্চ দু’দফায় ভোট হওয়া দরকার।
বিজেপি আরো দুটি দাবি জানিয়েছে কমিশনের কাছে। তারা বলেছে, পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের এলাকাগুলিতে বেশি পরিমাণে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়ন করা দরকার। এছাড়া নদীর চরের বুধগুলিতেও তারা অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বলেছে কমিশনকে। বিজেপির বক্তব্য ওইসব এলাকায় ভোটে এখনো রীতিমতো রিগিং হয়ে থাকে। বোরকা পরা ভোটারদের উপর বিশেষ নজরদারির দাবি অবশ্য শুধু বিহার বিজেপির নয়। গোটা দেশেই পদ্ম শিবির কমিশনের কাছে এই ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছে বহু বছর যাবত। দলের বক্তব্য, বোরকার আড়ালে অনেক সময় ভোর ভোটার ভোট দেয়। এমনকী পুরুষ ভোটাররাও এর সুযোগ নিয়ে থাকেন।
২০১১-এর জনগণনা অনুযায়ী বিহারে ১৬ শতাংশের বেশি মুসলিম রয়েছেন। গত ৪ দশক তাদের সিংহভাগ লালু প্রসাদের পার্টিকে ভোট দিয়ে আসছে। একাংশে সমর্থন আছে নীতীশ কুমারের প্রতিও। অন্যদিকে বিজেপি গোটা দেশের মত বিহারেও মুসলিমদের সমর্থন চায় না। বিহারে পদ্ম শিবির দীর্ঘদিন যাবত অভিযোগ করে আসছে লালু প্রসাদের পার্টি মুসলিমদের একাংশকে নির্বাচনে রিগিং সন্ত্রাসে ব্যবহার করে।