বিজেপির সঙ্গে গটআপ করেছে আব্বাস, রানিহাটির সভা থেকে তীব্র আক্রমণে ফিরহাদ
কল্যাণ অধিকারী
চতুর্থ দফার শেষ বেলার ভোট প্রচারে বৃহস্পতিবার রানিহাটি তে এসে কংগ্রেস কে অপদার্থ দল বলে কটাক্ষ করলেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, রাগটা হয় কংগ্রেসের উপরে। একটা অপদার্থ দল। যে সময় গুজরাটে ২হাজার মানুষকে খুন করে দেওয়া হল। যে সময় মুজাফফরনগরে মানুষ খুন হল। যে সময় মিথ্যা এনকাউন্টার করে একটার পর একটা মানুষকে মারা হল। সে সময় মোদি কে সিবিআই কয়েকটা প্রশ্ন করলো কংগ্রেস বলল ছেড়ে দাও ও মুখ্যমন্ত্রী আছে। তারপর ওই মোটা ভাই কে (অমিত শাহ) সিবিআই ধরল ৭০ দিন রাখলো। কংগ্রেসের সঙ্গে কি গটআপ হয়ে গেল বললো মোটা ভাই আপ ভাগ যাইয়ে। কেন কংগ্রেস তোমার ভেতরে কি লাইন ছিল বিজেপির সঙ্গে। কেন এই খুনিগুলোকে ছেড়ে দিলে সেদিন? এরা যদি সিবিআই হেফাজতে থাকত তাহলে তো ও প্রধানমন্ত্রী আর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হতে পারত না।
পাঁচলা বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী গুলশান মল্লিকের সমর্থনে প্রচারে আসেন তিনি। ওই মঞ্চ থেকে তিনি আরও বলেন, এতগুলো নিরীহ মানুষকে ওঁরা মেরে দিল গুজরাটে। এতগুলো নিরীহ মানুষকে মেরে দিল মুজাফফরনগরে। আর তাঁদের ক্লিনচিট দিয়ে আজকে কংগ্রেস তোমার জায়গাতে তোমায় হারিয়ে দিয়ে তাঁরা হয়ে গেছে। এখন সিবিআই কংগ্রেসের পিছনে ঘুরছে। কেমন মজা আসছে কংগ্রেস প্রশ্ন তোলেন তিনি। এরপরেই তিনি বলেন, কেন আসাম কে বিজেপির হাতে তুলে দিলে কংগ্রেস। এই সিপিএম ত্রিপুরা তো তোমার হাতে ছিল কেন বিজেপির হাতে তুলে দিলে প্রশ্ন তোলেন তিনি। আর যখন বাংলার উন্নয়ন নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এগোচ্ছে তখন বলছে পেছন দিক দিয়ে টেনে ধরো! নামাও মমতা কে! আরে মমতা কে নামালে কংগ্রেস আসতে পারবে না-কি সিপিএম আসতে পারবে? সমর্থকরা সমস্বরে জবাব দেয় কেউ পারবে না। তিনি আরও বলেন, যদি বিজেপি বাংলায় আসে বাংলায় দাঙ্গা হবে, বাংলায় খুনোখুনি হবে, যখন বোমা-গুলি চলবে তখন কোনটা হিন্দুর বাচ্চা, কোনটা মুসলমানের বাচ্চা দেখবে না। সেই বোম গুলিতে যেই বাচ্চাটা মারা যাবে তার মায়ের কোল খালি হবে। তাই আমরা চাই না এখানে আসুক বিজেপি। আসবে না বিজেপি আসবে না।
এরপরেই আব্বাস কে তীব্র আক্রমণ শানান ফিরহাদ। তিনি বলেন, সিপিএম আর কংগ্রেস দুটোই ল্যাংড়া। এক পায়ে দুজনে জড়িয়ে ধরে হাঁটছে। আর মাঝখানে আর একটা স্ক্রাচ এসেছে, ভাইজান ! আমি তো জানি ভাইজান মানে সলমন। আর এখন দেখি আর একটা ভাইজান এসেছে। উনি না-কি মুসলমানদের জন্য এসেছে! তাই নাম রেখেছি কমরেড আব্বাস সিদ্দিকি। কমরেড সেলিমের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে আব্বাস সিদ্দিকি। এরপর তিনি বলেন ও ওপরে ওপরে মুসলমান আর ভোট কাটার জন্য ভিতরে বিজেপির কাছ থেকে মাল নিয়ে নিচ্ছে। এর থেকে বড় মিরজাফর আর কেউ হতে পারে না। এরপরেই তিনি বলেন আমি ফিরহাদ হাকিম। আমি যাই ফুরফুরায়। হুজুরের সাথে যাই ফুরফুরায়। মাজারে গিয়ে দোয়া চাই। দাদা হুজুর সারাজীবন মানবজাতির জন্য দয়া চেয়েছিলেন। সবার ভালো হোক। বাংলার মানুষের ভালো হোক চেয়েছিলেন দাদা হুজুর। আর তাঁর বংশধর হয়ে তুমি কি করলে সিপিএম কংগ্রেস কে মিলিয়ে দিয়ে বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাত করলেন। মানুষ কোনদিন ক্ষমা করবে না। চতুর্থ দফার ভোটের শেষ বেলার বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রচারে কার্যত ঝড় তুললেন ফিরহাদ হাকিম।
এ বিষয় সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে সিপিএম এক নেতার কথায়, বিজেপি কে এই রাজ্যে আনার নেপথ্যে ওঁর দলের নেত্রীর অবদান বেশি। টালির ছাউনি ঘরেতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী এসেছিলেন মনে আছে কি। এখন এসব ভোটের জন্য নাটক করছে। আগামী ২ তারিখ সমস্তটা পরিস্কার হয়ে যাবে।