SIR করে ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করা ওঁদের লক্ষ্য নয়:অভিষেক
আগে ভোটাররা ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করত, এখন দেশের সরকার তার পছন্দের মতো ভোটার বেছে নিচ্ছে
কল্যাণ অধিকারী, রাজন্যা নিউজ
এসআইআর নিয়ে চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। সোমবারই পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর-এর দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। এই ইস্যুতে প্রথম থেকেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে আসছে রাজ্যের শাসকদল। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে এসআইআর-প্রসঙ্গে সুর চড়ালেন তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সরাসরি অভিযোগ তুললেন, এসআইআর করে কীভাবে মানুষকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে, মানুষের ভোটাধিকার খর্ব করে, মানুষকে তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায়, এটাই ওঁদের (বিজেপির) একমাত্র উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, আজকে দেশের যা পরিস্থিতি, আগে মানুষ ভোট দিয়ে দেশের সরকার নির্বাচিত করত। এখন দেশের সরকার কে ভোট দেবে তা সিলেক্ট করছে। আগে ভোটাররা ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করত। এখন দেশের সরকার, তার পছন্দের মতো ভোটার বেছে নিচ্ছে। কে ভোটার তালিকায় থাকবে। আর কার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে। তাঁদের লক্ষ্য এসআইআর করে ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করা নয়। আর তাই যদি থাকত, ওই ভোটার তালিকার নিরিখেই গত দেড় বছর আগে লোকসভা ভোট হয়েছে। সেখানে বাংলা-সহ ৫৪৩টি লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদরা নির্বাচিত হয়েছেন। দেশের সরকার হয়েছে। এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। এই ভোটার তালিকা যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম দায়-দায়িত্ব ও কর্তব্য অন্যকে জ্ঞান না দেওয়া। আপনি লোকসভা ভেঙে, নতুন করে ভোটে যান। ভোটার তালিকা যদি ত্রুটিযুক্ত হয়৷ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী-সহ যারা মন্ত্রীসভায় রয়েছেন, প্রায় ৬০শতাংশ প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন এই ত্রুটিযুক্ত ভোটার তালিকার নিরিখে। তাঁদের মৌলিক দায়িত্ব, দায়বদ্ধতা ও কর্তব্য, ইস্তফা দিয়ে তারপর আপনি এসআইআর করুন না। কেউ তো বারণ করছে না।
দিল্লি থেকে গত ২৪ ঘন্টা আগে এসআইআর ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তারপর থেকে রাজ্যবাসীর মনে হাজার প্রশ্নের ভিড়। এরই মাঝে এসআইআর নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়। তিনি এদিন কমিশন-বিজেপির বিরুদ্ধে বড় ষড়যন্ত্রর অভিযোগ এনেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন, নির্বাচনের অন্তত সাত মাস আগে এসআইআরের নামে কমিশনকে দিয়ে বিজেপি রাজ্যের প্রশাসনকে কব্জা করতে চাইছে। তিনি আরও বলেন, “একজন বৈধ ভোটারের নামও যদি বাদ যায়, দিল্লিতে কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করা হবে। অমিত শাহের পুলিশ থাকলে আটকে দেখাক। ২০২৩-এ ট্রেলার দেখিয়েছিলাম, এবার সিনেমাটা দেখাব।” পাশাপাশি প্রশ্ন তুললেন কেন এসআইআর থেকে বাদ দেওয়া হল বিজেপি শাষিত অসমকে। এর নেপথ্যে বিজেপির কৌশল রয়েছে বলেই দাবি অভিষেকের।
এদিন সোজাসাপটা বার্তা দিয়ে বললেন—“বাংলায় এসআইআর হলে তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্ক নাকি ধসে যাবে, যারা এটা ভাবছে তাদের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটে বাংলায় তৃণমূলের আসন সংখ্যা একটা হলেও বাড়বে। আর বিজেপির আসন সংখ্যা ৫০ নীচে নামবে। এইভাবেই মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক থেকে একের পর দাবি করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

