আমতা, উদয়নারায়ণপুর প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনের পর মন্ত্রীর নিশানায় কেন্দ্র

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ

আমতা-২ ব্লকের বানভাসি কুলিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি মঙ্গলবার খতিয়ে দেখলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। জলের তলায় ভাটোরা চিতনানের বিস্তীর্ণ অংশ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার মানুষ। কুলিয়া ঘাটে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রকেই দায়ী করলেন তিনি। 

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ কুলিয়ায় এসে পৌঁছান তিনি। মন্ত্রী আসার খবরে এলাকায় ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছেন আমতা বিধানসভার বিধায়ক সুকান্ত পাল। ভাটোরা ও জিবি চিতনান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, জয়পুর থানার ওসি অভিষেক রায়, আমতা-২ বিডিও মাসুদুর রহমান, আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মিদ্যা সহ বহু আধিকারিক। মন্ত্রী কনভয় থেকে নেমেই বিধায়ক সুকান্ত পালের সঙ্গে কথা বলতে বলতে এগিয়ে যান মুন্ডেশ্বরী নদীর গায়ে কুলিয়া ঘাটে। ক’দিন আগেই জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বাঁশের অস্থায়ী সেতু। সেখানে দাঁড়িয়ে জল ছাড়া নিয়ে ডিভিসিকে দায়ী করেন তিনি। 

মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “জল ছাড়া নিয়ে  ডিভিসি কোন নিয়ন্ত্রণ করে জল ছাড়ে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারেবারে ডিভিসিকে অনুরোধ করলেও কোন কথা শোনেন না তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গকে ডুবানোর চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র।”

মন্ত্রী যখন কেন্দ্রকে নিশানা করছেন তখন পানীয়জল সমস্যার কথা বলছেন গ্রামবাসীরা। চিতনান এলাকা থেকে মুন্ডেশ্বরীর ভয়াল স্রোত পার করে নৌকা করে জল আনতে আসছেন এ পাড় কুলিয়ায়। মহিলাদের অভিযোগ, জলের কল ডুবে গিয়েছে। পানীয়জল তো চাই। প্রানের ঝুকি নিয়ে নদী পার করে আসতে হচ্ছে। একি অভিযোগ সেহাগোড়ী, থলিয়া এলাকায়। ভেলায় করে গলা জল পার করে পানীয়জল আনতে হচ্ছে। 

এ বিষয় প্রসঙ্গে বিধায়ক সুকান্ত পাল বলেন, “পানীয়জল সমস্যার জন্য প্ল্যাস্টিক পাউচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের পাশে সরকার সর্বদা রয়েছে।”

কুলিয়া থেকে আমতার সেচ দপ্তরের বাংলোয় জান মন্ত্রী। ওখান থেকে উদয়নারায়ণপুরে যান তিনি। তবে তর পৌঁছানোর আগেই দুপুরে এক কিশোরীর মৃত্যু হয় জলে ডুবে। জানা গেছে, বন্যার জলে ডুবে মৃত্যূ হয় তাঁর । মৃত কিশোরীর নাম রিমা রক্ষিত (১৬)। উদয়নারায়নপুরের জোকার বাসিন্দা। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত সে। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ির সামনে দিয়ে তীব্র বেগে বয়ে যাওয়া জলে ভেসে যায় রিমা। বাড়ির বেশ কিছুটা দুর থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। এরপর তাঁকে উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে। 

বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বন্যায় প্রথম মৃত্যু। বাড়ির লোকের অসতর্কতার জন্য এই ঘটনা ঘটেছে।” 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *