মান্থার দাপটে লন্ডভন্ড অন্ধ্র উপকূল, ১০০কিমি বেগে বইছে ঝড়

রাজন্যা নিউজ ব্যুরো

স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আগেই অন্ধ্রের উপকূলে বিক্রম দেখাতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় মন্থা। চিত্তুর, তিরুপতি ও কাকিনাড়ায় শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি। সঙ্গে রয়েছে ঝোড়ো হাওয়া। ফলে মঙ্গলবার দুপুর থেকেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একাধিক জায়গায় গাছ উপড়ে গিয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়েছে মৌসম ভবন। ভয়ঙ্কর শক্তি নিয়ে মান্থা আছড়ে পড়ার পরে বেলাগাম তাণ্ডব চালাবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। প্রথমে জানা গিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় মান্থা আছড়ে পড়বে অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়ার কাছে মছলিপত্তনম ও কলিঙ্গপত্তনমের মধ্যে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের পথ বদল হয়েছে। ল্যান্ডফল হতে চলেছে অন্ধ্রের অঙ্গোল ও কাঁকিনাড়ার মধ্যে। মান্থার জেরে গুন্টুর, বাপাতলা এবং বিজয়ওয়াড়ায় অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। রাজ্যের মোট ১৬ জেলায় জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। সমুদ্রের জল ভিতরে ঢুকে পড়ায় উপ্পাদা, সুব্বামপেট, মায়াপত্তনম এবং সুরাদপেট থেকে উপকূলবর্তী পরিবারগুলিকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মান্থার প্রভাবে ভারী বৃষ্টি হবে তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদ এবং ওয়ারাঙ্গলেও। প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে ভূমিধসের সম্ভাবনাও রয়েছে। অন্যদিকে মান্থার তাণ্ডবের হাত থেকে বাঁচতে রেল কর্তৃপক্ষ অন্ধ্রপ্রদেশ জুড়ে ৬৫টিরও বেশি যাত্রীবাহী ও এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করেছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বিশাখাপত্তনম বিমানবন্দরে ২৮ অক্টোবরের জন্য নির্ধারিত সমস্ত ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের উড়ান পরিষেবা বাতিল করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে দফায়-দফায় বৈঠক করেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মান্থা যত ল্যান্ডফলের দিকে এগোচ্ছে ততই বাংলার আবহাওয়ারও বদল ঘটছে। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই কলকাতায় আংশিক মেঘলা আকাশ ছিল। দু’এক পশলা হালকা বৃষ্টিও হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়। সময় যত এগোবে রাজ্যের আবহাওয়ার অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের পরোক্ষ প্রভাবে এরাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় রীতিমতো সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলে সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্র যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *