মৃতদের জীবিত দেখানোর অভিযোগ যাঁদের আপত্তি আছে তাদের তালিকা চাইল সুপ্রিম কোর্ট
রাজন্যা নিউজ ব্যুরো:
বিহারে এসআইআর-এর প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি শুরু হয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে।সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে জানিয়েছে, নোটিস ছাড়া বিহারে ভোটার তালিকা থেকে কোনও নাম বাদ যাবে না। কী কারণে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে তা উল্লেখ করা হবে নোটিস এদিন পৌনে একটা নাগাদ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হয়। কমিশনের পক্ষের আইনজীবী জানান, গত সোমবার তাঁদের কাছে ২০০ পাতার একটি অন্তর্র্বতী আবেদন জমা পড়েছে।
আইনজীবী কপিল সিব্বাল সওয়াল করেন, ‘একটি বিধানসভা এলাকায় ১২ জনকে জীবিত দেখানো হয়েছে। অথচ বাস্তবে তাঁরা মৃত।’ এনিয়ে বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তরা কোথায়? যাঁদের আপত্তি আছে, তাঁদের তালিকা জমা দিন। যদি দেখা যায় কেউ জীবিত অথচ তাকে মৃত দেখানো হয়েছে, তাহলে আমরা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
উত্তরে কপিল সিব্বাল বলেন, ‘প্রতি বুথেই এই ভুল রয়েছে। আমরা কীভাবে খুঁজে বার করব? এটা ন্যায্য নয়।’ আইনজীবী যুক্তি দেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমার কিছু প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই। যে আমার নাম অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করবে, প্রমাণের দায় তার।’
কমিশনের আইনজীবী এনিয়ে বলেন, ‘খসড়া তালিকা তৈরি করে নোটিস দেওয়া হয়েছে। কারও আপত্তি থাকলে জানাতে হবে। ত্রুটি হলে সংশোধন করা হবে।’
এসআইআর মামলায় কপিল সিব্বাল বলেন, ১৯৫০ সালের পরে জন্মগ্রহণকারী যে কেউ, যদি ১৯৮৭ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে জন্ম না নিয়ে থাকে, তাহলে সংবিধান অনুযায়ী ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে।
ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, ‘তিনি কি মূল মামলার মেরিটস নিয়ে যুক্তি দিতে চান, নাকি শুধু প্রক্রিয়া নিয়ে?’ আইনজীবী বলেন, ‘সময় অল্প, তাই শুধু প্রক্রিয়াগত ত্রুটি তুলে ধরবেন।’
কপিল সিব্বাল জানান, ‘ফর্ম ৫ একটি নোটিশ, যা ঝুলিয়ে রাখতে হবে।’ এরপর তিনি নিয়ম ১২-তে যান, যেখানে বলা হয়েছে, ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির আবেদন ফর্ম ৬-এ দিতে হবে এবং আবেদনকারীকে স্বাক্ষর করতে হবে। সেখানে আধার বিবরণীর কথা বলা আছে, যা এই এসআইআর প্রক্রিয়ায় জরুরি। এছাড়া স্ব-স্বাক্ষরিত জন্মতারিখ প্রমাণপত্র বা আধার না থাকলে জন্মতারিখ ও স্থায়ী বসবাসের তথ্যই যথেষ্ট। তাঁর অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী কোনও চিঠি বা ফর্ম ৪ পাঠানো হয়নি, বাড়িতে গিয়ে নথি সংগ্রহও করা হয়নি।
দুপুর ২ টো নাগাদ ফের মামলার শুনানি শুরু হয়। বিচারপতির বেঞ্চ জানতে চায়, ‘ফর্মে কোথায় লেখা আছে সব নথি থাকা বাধ্যতামূলক?’ পাশাপাশি তাঁরা স্পষ্ট করেন, ‘সিমকার্ড কিনতে গেলেও তো নথি জমা করতেল হয়। নাগরিকত্বের জন্য একটি নথিই যথেষ্ট।’