নবদ্বীপ-মায়াপুর ভ্রমণ পথে মন ভালো করা বিষ্ণুপ্রিয়া হল্ট
কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ
হাওড়া থেকে সময়ে ছেড়ে কিছুটা দেরি করেই গন্তব্যের স্টেশনে পৌঁছে দিল কাটোয়া লোকাল। শীতের দুপুর। খুব বেশি লোকজন নামেনি। ব্যাগ নিয়ে স্টেশনে পা রাখতেই সামনে স্টেশনের নামের ফলক। হলুদ রঙের ফলকের মাঝে বাংলা হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা বিষ্ণুপ্রিয়া হল্ট। নামটা পড়তেই মনটা ভালো হয়ে গেল। ষোড়শ শতাব্দীর নবদ্বীপ ধামের বিশিষ্ট বিদুষী নারী ছিলেন বিষ্ণুপ্রিয়া। তাঁর নামেই নামাঙ্কিত স্টেশন। নদিয়া জনপদে পৌঁছে মায়াপুর যাত্রা শুরুতেই পেয়ে গেলাম গৌরাঙ্গ পরশ।
নবদ্বীপ-মায়াপুর ভ্রমণে বছরভর ভিড় থাকে গৌরাঙ্গ ভক্তদের। একিসঙ্গে মায়াপুর ইসকন মন্দির দেখতে আসেন বহু পর্যটক। প্রত্যেকের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন নবদ্বীপ ধাম। লোকাল ট্রেন থেকে নেমে টোটোয় চেপে সোজা নবদ্বীপ ফেরি ঘাট। তারপর নদী টপকে মায়াপুর। কিন্তু নবদ্বীপ ধাম স্টেশনে না নেমে পরের স্টেশন বিষ্ণুপ্রিয়া হল্ট। চৈতন্য মহাপ্রভুর স্থানে যাবার আগে স্টেশনের নাম মোহিত করে দেয়। ওখান থেকেও মিলবে টোটো। সোজা পৌঁছে দেবে বড়াল ঘাট (নবদ্বীপ ঘাট)। তারপর লঞ্চ বা ভুটভুটি চেপে হুলোর ঘাট (মায়াপুর ঘাট)।
বিষ্ণুপ্রিয়া হল্ট রেলওয়ে স্টেশন নবদ্বীপ শহরের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশন থেকে ১১৫ কিলোমিটার ও হাওড়া থেকে ১০৭ কিমি দুরে অবস্থিত এবং ব্যান্ডেল থেকে ৬২ কিমি দূরে নদিয়া জেলায় অবস্থিত। আপ ও ডাউনে ট্রেনের জন্য দুটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। তথ্য বলছে, ১৮৬২ সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের অন্তর্গত কলকাতা (শিয়ালদহ)-কুষ্টিয়া রেলপথ যাত্রী পরিবহণের জন্য খোলা হয়। এরপর ১৯১৩ সালে হুগলি-কাটোয়া শাখা রেলপথ হাওড়া শাখার একটি সম্প্রসারিত অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৯৪-৯৬ সালের মধ্যে এই শাখাটি বৈদ্যুতিক ট্রেন চলার উপযুক্ত করা হয়েছিল।
নবদ্বীপ-মায়াপুর ভ্রমণে গেলে নবদ্বীপ ধাম ছাড়িয়ে পরের স্টেশন হচ্ছে বিষ্ণুপ্রিয়া হল্ট। ট্রেনে একি ভাড়া। মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের সহধর্মিণী বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী নামাঙ্কিত স্টেশন। ছিমছাম স্টেশনের পাশেই টোটো স্ট্যান্ড। রয়েছে রেস্টুরেন্ট। মিনারেল ওয়াটার। গৌরাঙ্গ ভক্তদের মুখে জয় গৌড়, জয় নিতাই শুনতে পাবেন। এককথায় আপনার যাত্রা শুভ করে দেবে।