দুর্যোগে নিহত প্রত্যেক পরিবারের পাশে মুখ্যমন্ত্রী
রাজন্যা নিউজ ব্যুরো
সোমবার গভীর রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল। অঝোর বৃষ্টিপাত হয়েছে কলকাতা শহরজুড়ে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, গত চার দশকে একদিনে এত বৃষ্টি হয়নি কলকাতায়। জলমগ্ন রাস্তাঘাটে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০ জনের। এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতর পরিবাররের প্রতি মঙ্গলবারই সমবেদনা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব¨্যােপাধ্যায়। পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবেও জানিয়েছিলেন। সেই মতো বুধবার আর্থিক সহায়তার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে মৃতদের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার, ভবানীপুরের ৭০ পল্লির শীতলা মন্দিরে দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব¨্যােপাধ্যায়। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে এখানেই থামেননি তিনি। কড়া ভাষায় সিইএসসি’কে নিশানা করে বলেন, ‘এই মৃত্যুর দায় সিইএসসি’র। ওদের গাফিলতির জন্যই এতগুলো প্রাণ গেল। তাদেরই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’ এখানেই থেমে না থেকে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার নেতৃত্বাধীনসংস্থা সিইএসসি’র উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিইএসসিকে মৃতদের পরিবারের একজনকে চাকরি দিতে হবে। কিন্তু সিইএসই চাকরি না দিলে রাজ্যের পক্ষ থেকে স্পেশাল হোমগার্ডে চাকরি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, সিইএসসিকে পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতায় লাগাতার বৃষ্টিতে দুর্যোগ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ডিভিসি’র প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি আমাদের হাতে নেই। কিন্তু বিশ বছর ধরে ফরাক্কা ব্যারেজ, কলকাতা বন্দর ড্রেজিং হয়নি। বিহার-ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে জল এসে পড়ে আমাদের এখানে। সবটাই আমাদের সামলাতে হয়।’
সিইএসসি’র পরিকাঠামো নিয়েও এদিন আবারও প্রশ্ন তোলেন মমতা। বলেন, এখানে ব্যবসা করছে, আর পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ করছে রাজস্থানে! এখানে কাজ করছে না। কতবার বলেছি! বলতে বলতে মুখ ব্যথা হয়ে গিয়েছে। তবে একইসঙ্গে জানান, সংস্থার কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এই সব বিষয়ে সদর্থক পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন গোয়েঙ্কা।
জল জমা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কলকাতার একাধিক অংশে এখনও নিচু জায়গাগুলিতে জল জমে রয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে।
জানা গিয়েছে, বুধবার ভবানীপুর ৭০ পল্লী শীতলা মন্দিরের পুজোর পাশাপাশি একডালিয়া এভারগ্রীন, সিংহিপার্ক, বালিগঞ্জ কালচারালের দুর্গাপুজো, সমাজসেবী সংঘের দুর্গাপুজো, হিন্দুস্থান পার্কসার্বজনীন, শিবমন্দির দুর্গোৎসব, মুদিয়ালি ক্লাব সহ আরও একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।