খেজুর গাছের দেখা নেই বললেই চলে, মোড়ে মোড়ে তৈরি হচ্ছে খেজুর গুড় কতটা আসল!
কল্যাণ অধিকারী
গ্রামে-গঞ্জে তিন-চার কিমি অন্তর রাস্তার ধারে খেজুর গুড় তৈরি হচ্ছে। খেজুর গাছ প্রায় দেখাই মেলে না! তারপরেও খেজুর রস থেকে গুড় হচ্ছে কেমনে? এই প্রশ্ন নিয়েই আমরা গিয়েছিলাম একাধিক গুড় তৈরির কারবারিদের কাছে। যতটা জানালেন তা আঁতকে ওঠার জন্য যথেষ্ট।
গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় তিন-চার কিমি পথ অতিক্রম করলেই খেজুর গুড় তৈরি হচ্ছে তা দেখা মিলবে। সকাল থেকে বড় উনুনে খড় জ্বালিয়ে চাটাই কড়ায় গুড় তৈরি হচ্ছে। টকটকে রঙ আর সুগন্ধে ম ম করছে এলাকা। তারপর তৈরি হওয়া গুড় মাটির পাত্রে ঢালা হয়। তারপর তা ঠান্ডা হলে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন দোকানে। এখানেই উঠছে প্রশ্ন, এত সুগন্ধের গুড় তৈরির পিছনের আসল রহস্যটা কি?
গ্রামের দিকে খেজুর গাছের দেখা নেই বললেই চলে। যে ক’টা রয়েছে খুঁজে বের করে ভাঁড় পেতে তা থেকে কতটা রস মিলছে! কিলো কিলো গুড় তৈরির জন্য কার্যত অপ্রতুল। তারপরেও মোড়ে মোড়ে তৈরি হচ্ছে খেজুর গুড়। তা কতটা আসল! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিউলিদের কথায়, গাছ কমে যাওয়ায় অনেকক্ষেত্রেই চিনির রস ব্যবহার করা হচ্ছে! কিন্তু রং ও সুগন্ধ আসছে কেমনে? এই প্রশ্নে জবাব না মিললেও অনেকক্ষেত্রেই ব্যবহার হচ্ছে ক্ষতিকর কেমিক্যাল! এতে করে সঠিক ভাবে রঙ আসছে। একি সঙ্গে অরিজিনাল সুগন্ধ মিলছে। ফলে আসল খেজুর গুড় বলে যা চালানো হচ্ছে তা একপ্রকার ভেজাল বলেই মত সাধারণ মানুষের একাংশের।
শীতে নতুন গুড়ের স্বাদ পেতে অপেক্ষায় থাকেন হাজারো মানুষ। কিন্তু আসল বলে গ্রাম-বাংলায় যা তৈরি হচ্ছে আদতে অনেকাংশেই ভেজাল বলেই মত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারবারিদের একাংশের। বিষয়টি নিয়ে খাদ্য দফতরের কাছ থেকেও সদুত্তর মেলেনি।
চিত্র সংগৃহীত