ডেস্টিনেশন দার্জিলিং
কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ
কাঞ্চির বাঁশি বেজে উঠবে সেই কাকভোরে। তারপর ঘুম চোখে কম্বল ঠেলে হোটেল ছেড়ে গাড়িতে উঠে রওনা দেওয়া। টাইগার হিল পৌঁছে দুচোখ ভোরে সূর্যোদয় এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা। আমার কাছে প্রতিবার যেন নতুন কিছু এনে দেয় দার্জিলিং।
শুক্রবার সকালেই রওনা দেব ‘শৈল শহরের রানী’ দার্জিলিং। ইচ্ছে করে হিমালয়ের উপর দিয়ে উড়ে যেতে। কিন্তু হিমালয়ের আগেই মুখ ঘুরিয়ে বাগডোগরায় নামিয়ে দেয়। বাকি ঘন্টা তিনেকের পথ গাড়িতে করে যাওয়া। সকালের ট্রয়ট্রেন যখন রওনা দেয় তখন কলকাতায় লাউঞ্জে বসে অপেক্ষায় থাকতে হবে। পঞ্চাশ মিনিট পরে বাগডোগরা নামবার আগেই তিনি রওনা দিয়ে দেন।
আমাদের কাছে শৈলশহর সেই কবে থেকেই দার্জিলিং। একশো পাঁচ টাকার পেট্রোল, হাজারের কাছে গ্যাস কিনে বেড়াতে যাওয়ার আনন্দই মাটি। তার উপর করোনার রক্তচক্ষু সব মিলিয়ে উৎকণ্ঠায় সকলেই। কাছেপিঠে দিন চারেকের জন্য দার্জিলিং কোন কথা হবে না। একে তো নিজের রাজ্যের পর্যটনস্থল। বাড়তি পাওনা বরফাবৃত অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘা। কাঞ্চাদের গ্রামে কাঠের চেয়ারে বসে গরমাগরম মোমো খাওয়া উফ ভাবাই যাচ্ছে না।
হোটেলের ব্যালকনিতে চেয়ারে বসুন খয়েরী রংয়ের এক কাপ চা হাতে। বাইরে ঝিরঝিরে বৃষ্টি পড়ছে। ভিজছে অর্কিড। আপনার অন্য হাতে রেখেছেন উপন্যাস। পড়তে থাকুন আর চায়ের কাপে ঠোঁট ভেজান। শরীর ও মনের উষ্ণতা তখন পাহাড় শৃঙ্গ ছুঁয়েছে। যতই সিমলা-মানালি যান না কেন, দার্জিলিং এর ফ্লেভার পাবেন না। দিনের আলোয় পাহাড়ি ‘ঘিঞ্জি’ শহর অন্ধকার নামতেই আলোর রানী হয়ে ওঠে।
সন্ধেবেলায় ম্যালে বসে কফি খাওয়া অথবা পাহাড়ি অর্কিডের সামনে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকা দূরের বরফে মোড়া শৃঙ্গকে। শুধুমাত্র যে আমিই তা নয়, আমার মতন আপনিও একবাক্যে বলতে পারেন ‘দার্জিলিং আমি তোমায় ভালবাসি’। এ এক অন্যরকম টান। প্রেমের হোক বা কবিতার।