১৭ বছর বয়সি কোয়েলের লক্ষ্য অলিম্পিক্স

কল্যাণ অধিকারী, এডিটর রাজন্যা নিউজ
আমেদাবাদে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ওয়েটলিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে তিন-তিনটি বিশ্বরেকর্ড। টিভিতে এই খবর দেখে চোখে জল ধরে রাখতে পারেনি বাবা-মা। ঘরের মেয়ের সাফল্যে আপ্লুত পাড়া-প্রতিবেশীরাও। কোয়েলের আসার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে ধুলাগড়ের ব্যানার্জি পাড়ার হাজারো বাসিন্দা।
মঙ্গলবার রাতটা ছিলে অনেককিছু প্রাপ্তির। রাতে মেয়ের সাফল্যের খবর পৌঁছাতেই কার্যত না ঘুমিয়েই কাটিয়েছে হাওড়ার সাঁকরাইলের ধূলাগড়ের ব্যানার্জি পাড়ার মানুষজন। কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে তিন-তিনটি বিশ্বরেকর্ড মুখের কথা। প্রতিবেশীরা বুধবার জানান, কোয়েলের জন্য অনেক কষ্ট করেছে ওর বাবা-মা। ভাত ফেলে রেখে মেয়েকে নিয়ে প্র্যাকটিস করাতে নিয়ে গিয়েছে। আজকের দিনটা দেখার জন্যই। আমরা সবাই রজনীগন্ধা ফুলের মালা, চন্দন নিয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। কখন ঘরে ফেরে সোনার মেয়ে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কোয়েলের বাবা মিঠুন বর দেউলপুর এলাকায় একটি মাংসের দোকান চালান। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা নেই বললেই চলে। দেউলপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী কোয়েল। মেয়ের পড়াশোনা, খেলাধুলোর কোন বাধ না সাধে তারজন্য সমস্ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এমনকি মেয়ের খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ দেখে, প্রয়োজনে প্রতিদিন স্কুলে না গিয়ে খেলাধুলো ও অনুশীলন অন্তত প্রতিদিন করুক। একটা সময় মিঠুন যোগাসন করতেন। মাঠে দৌড়াতেন। কিন্তু আর্থিক প্রতিবন্ধকতা দৌড় থামিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু মেয়েকে ছোট থেকেই ভারোত্তোলনের বিভিন্ন কৌশল শেখাতে শিখিয়েছেন। ২০১৮ সাল থেকে পাঁচলার দেউলপুরে কোচ অষ্টম দাসের তত্ত্বাবধানে ওয়েটলিফটিং শুরু করে কোয়েল। প্রথমে জেলা, তারপর রাজ্য এবং পরে জাতীয় পর্যায়ের একাধিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। বেশিরভাগ প্রতিযোগিতায় সোনার পদক জিতে এনেছে। মিঠুন জানান, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (সাই) পাতিয়ালার জাতীয় ক্যাম্পে নির্বাচিত হয় কোয়েল। তারপর থেকে সেখানেই পড়াশোনার সঙ্গে প্র্যাকটিস চালিয়ে যান। কোয়েলের আগামীর লক্ষ্য অলিম্পিক্সে যাওয়া। মেয়ে যেটা ভালো বোঝে করুক। মেয়ের উপর কোনও চাপ দিতে রাজি নন মিঠুন।
বাংলার মেয়ে কোয়েলের এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী। এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লেখেন, আমাদের বাংলার ঘরের মেয়ে, হাওড়ার বাসিন্দা কোয়েল বর আহমদাবাদে অনুষ্ঠিত ভারোত্তোলনের কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে বিশ্বরেকর্ডের হ্যাটট্রিক করে জোড়া সোনা জিতে বাংলাকে গর্বিত করেছে। আমি ওকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও ভালোবাসা জানাই। আগামী দিনে কোয়েল আরও এগিয়ে যান, প্রার্থনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

অন্যদিকে, সিআইএসসিই রিজিওন্যাল যোগা টুর্নামেন্টে, আমতার আইডিয়াল পাবলিক স্কুলের ছাত্রী অস্মিতা পল্লে দ্বিতীয় রানার্স আপ হয়ে স্কুলের নাম উজ্জ্বল করল। ১৪ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিভাগে অন্যদের টেক্কা দিয়েছে অস্মিতা।