হাওড়া জেলায় সর্বপ্রথম সারা বাংলা আদিবাসী তীরন্দাজের আসর, যোগ দিয়েছেন শতাধিক মহিলা ও পুরুষ তীরন্দাজ

কল্যাণ অধিকারী এডিটর রাজন্যা নিউজ

লালমনি সোরেন, হেমন্ত টুডু, সম্ব হেমব্রম, সুনিতা হেমব্রম সহ অন্ততপক্ষে শতাধিক আদিবাসী পুরুষ ও মহিলা তীরন্দাজ দিনভর তীরন্দাজ প্রতিযোগিতায় নিজেদের কৌশল দেখালেন। প্রায় ৭০ মিটার দূরের টার্গেট ‘বুল’স আই নিশানায় পরের পর তীর ছুঁড়লেন আদিবাসী মহিলারা। অবাক দৃষ্টিতে দেখলেন হাজারো গ্রামবাসী।

গ্রামীণ হাওড়ার আমতা থানার বেতাইয়ে রবিবার বসেছিল সারা বাংলা আদিবাসী তীরন্দাজ প্রতিযোগিতা। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম দুই মেদিনীপুর, হুগলি জেলার সেরার সেরা তীরন্দাজরা অংশ নিয়েছেন। তবে সবার নজর কাড়লেন লালমনি সোরেন। বাড়িতে আর্থিক অনটন, সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতেই হিমসিম তার উপর আবার পড়াশোনা! কিন্তু তীর ছোঁড়া ও লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করার ক্ষেত্রে লালমনি বাকিদের টেক্কা দিক।

কামারপুকুর এলাকার বাসিন্দা লালমনি রবিবার এলাকার প্রায় পঁচিশ জন তীরন্দাজ সকাল-সকাল পৌঁছে ছিল আমতার বেতাইয়ে। ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে অন্যান্য জেলার আদিবাসী তীরন্দাজ। সে এক অনন্য পরিবেশ। গ্রামবাসীরা জানালেন, তীরন্দাজী কাকে বলে সেটা সচক্ষে আজ দেখলাম। একটা সময় মানুষের কাছে ছিল এই ধরনের প্রধান অস্ত্র। পূর্বের সেই রীতি আজও এগিয়ে নিয়ে চলেছেন ওঁরা।

উদ্যোক্তা আমতার হিন্দু সংহতি। এমন ভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন প্রশ্নে উদ্যোক্তাদের দাবি, তীরন্দাজ একটা সময় প্রচলিত ছিল। তবে এখন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই গ্রামবাংলার ছেলেমেয়েদের মধ্যে তীরন্দাজির আগ্রহ বৃদ্ধি করতে এবং ধনুর্বিদ্যার বিষয় অবগত করতে এহেন উদ্যোগ।

হাওড়া জেলায় সর্বপ্রথম এ প্রসঙ্গে অক্ষয়, অঞ্জন অধিকারী, সন্দীপ মন্ডল প্রত্যেকে এদিন বেতাই ফুটবল মাঠে দেখছেন আদিবাসী মহিলা ও পুরুষদের তীরন্দাজি। ওদের কথায়, পুরুলিয়া ঘুরতে গিয়ে এমন তীরন্দাজদের দেখেছিলেন। কিন্তু জেলায় প্রথম। যা অবশ্যই গ্রামবাসীদের উদবুদ্ধ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *