প্ল্যাস্টিক বর্জন ও সাগরদ্বীপকে পরিবেশ বান্ধব বানাতে অভিনব পন্থায় সাফল্য জিবিডিএ-র
আলোক প্রসাদ / কল্যাণ অধিকারী, গঙ্গাসাগর
হাইলাইটস
❏ প্ল্যাস্টিক বর্জন করে সাড়ে চার লক্ষ পলি ব্যাগ ও কুড়ি হাজার সিমের ব্যাগ বিতরণ।
❏ দোকানদারদের হাতে কাপড় ও কাগজের ব্যাগও দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে।
❏ পরিবেশ বান্ধব সাগরদ্বীপ বানাতে জিবিডিএ-র ভূমিকায় স্বচ্ছ সাগরতট।
মকর সংক্রান্তি-তে গঙ্গাসাগর মেলায় আগত জনতার হাতে এক ভিন্ন উপাদানের কাপড় ও ব্যাগ দেখা গেল। ওই ব্যাগ সম্পর্কে জানতে চাইলে দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকল্পের আওতায় গঙ্গাসাগর বকখালী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (জিবিডিএ) এটি মানুষের মাঝে বিতরণ করছে। এই বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে জিবিডিএ অফিসে পৌঁছালাম। তখন সবে দুপুর গড়িয়েছে। বেশ কয়েকজন দোকানদার এসেছেন ব্যাগ নিতে।
জিবিডিএ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা শম্ভুদ্বীপ সরকার বলেন, “প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার জন্য মানুষের মধ্যে জৈব পলিমার ব্যাগ তৈরি করা হচ্ছে। এটি দেখতে প্লাস্টিকের মতো তবে এটি আসলে কর্ন স্টার্চ। এই পদার্থটি একশো শতাংশ দ্রবণীয়। তিন মাস ব্যবহার না হলে এই পদার্থটি নিজেই মিশ্রিত হয়ে যাবে। এই পদার্থটি এক ধরণের প্লাস্টিকের বিকল্প। দফতরের দু’শোর বেশি স্বেচ্ছাসেবীদের দ্বারা এই ব্যাগটি তীর্থযাত্রার সময় জৈব পলিমার বিতরণ করছেন। এর সঙ্গে দোকানদারদের হাতে কাপড় ও কাগজের ব্যাগও দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের প্লাস্টিকের ব্যাগ দেখা যাচ্ছে তাদের কাছে জৈব পলিমার ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, “বড় সিমের ব্যাগগুলিও অনুরূপ উপাদান সহ প্রস্তুত করা হয়েছে, যাতে আবর্জনা পূর্ণ হবে। এর ধারণক্ষমতা বেশি পাঁচ কেজি পর্যন্ত। ওই কর্মকর্তা জানান, জনগণের মধ্যে চার দশমিক পাঁচ লক্ষ পলি ব্যাগ এবং কুড়ি হাজার সিমের ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে। গঙ্গাসাগর তটে জিবিডিএ বিভাগ কর্তৃক মকর সংক্রান্তির জন্য একটি অস্থায়ী কর্মশালা তৈরি করা হয়েছে। কর্মশালায় যাওয়ার পরে জিবিডিএ অফিসার জানান, এখানের কর্মশালায় কীভাবে ব্যবহৃত জিনিষপত্র দিয়ে বানানো হয় তা দেখানো হচ্ছে। লোকেরা চলে যাওয়ার পরে, কাচের বোতল, পুরানো কাপড় এবং অন্যান্য জিনিস সৈকত থেকে সংগ্রহ করা হবে। যা আবার ব্যবহার করা যেতে পারে অর্থাৎ পুনর্ব্যবহার করা যায় সমস্তটা কর্মশালায় দেখালেন। ব্যবহৃত কাচের বোতলগুলি রঙিন করে সুন্দর ফুলদানি তৈরি করা হচ্ছে, এছাড়া পুরাতন পোশাক থেকে মাদুর এবং ব্যাগ প্রস্তুত করছেন মহিলারা।
তিনি জানাচ্ছিলেন এই কাজটি করার জন্য বিভিন্ন এনজিও এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। মেলার পরে এটি বিবেচনা করা হবে কীভাবে এই জিনিসগুলি মানুষের কাছে জানানো যেতে পারে। ওই কর্মকর্তা বললেন, বছরভর করা হয় না শুধুমাত্র গঙ্গাসাগর মেলার জন্য জিবিডিএ বিভাগ এই পরিকল্পনাটি নিয়েছে। তবে আগামী দিনে চেষ্টা করা হবে বছরভর সাগরে করার। যাতে করে পরিবেশ বান্ধব হয় সাগরদ্বীপ।
চিত্র রমেশ রায়।