হলদিয়ার সভায় বাংলায় নমস্কার, মনীষীদের প্রণাম ‘আমি তোমাদের লোক’ হওয়ার চেষ্টায় প্রধানমন্ত্রী
কল্যাণ অধিকারী, হলদিয়া
হাইলাইটস
❏ রাজীব-শুভেন্দু একুশের ভোটের প্রধান দুই সৈনিক বোঝালেন নরেন্দ্র মোদী
❏ আমফান, কর্মসংস্থান, ‘কিষাণ সম্মান নিধি’, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রধানমন্ত্রীর নিশানায় মমতা
❏ ভোটের নির্ঘন্ট প্রকাশ হলে একাধিক জনসভা লক্ষ্য বুঝিয়েছেন তৃণমূলকে
ভোট বঙ্গে প্রথম মেগা সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার হলদিয়ার জনসভার মঞ্চ থেকে নমস্কার বলে বাঙালি আবেগে মিশে যাবার চেষ্টা করলেন। যত সময় এগিয়েছে ভাষণে বাংলা শব্দের ব্যবহার করেছেন তিনি। বাংলার মাটিতে মেগা জনসভা করতে বাংলা ভাষার ব্যবহারে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দেশের সব রাজ্যে বিজেপির জয়জয়কার হয়েছে। বাংলায় লোকসভা ভোট থেকে এগোনোর গতি বেড়েছে বিজেপি-র। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। লড়াই দিতে গেলে বাংলা ভাষার প্রতি যত্নশীল হতে হবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বুঝেছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। গত সোমবার বাজেট বিশ্লেষণের সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দুঃসময়’ কবিতার লাইন উদ্ধৃত করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। বঙ্গে যে সমস্ত বিজেপি নেতৃত্ব আসছেন তাঁরা প্রত্যেকে বাংলা ভাষায় সম্ভাষণ জানাচ্ছেন। রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম বসু কে স্মরণ করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
হলদিয়ার মেগা মঞ্চ থেকে বাংলার মনীষীদের প্রণাম জানালেন। বক্তব্যের প্রতিটি মুহূর্তে রাজ্য সরকারের কাজকর্ম ও তৃণমূল কংগ্রেস কে আক্রমণ শানালেন তিনি। কখনও আমফান দুর্নীতির কথা স্মরণ করালেন। হলদিয়া পরিশোধনাগারের দ্বিতীয় ক্যাটালিটিক-আইসোডিওয়াকসিং ইউনিটের শিলান্যাস করেন তিনি। কর্মসংস্থান নিয়ে নতুন দিশা দেখালেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের কেউ না থাকলেও খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে দিল্লিতে দেখা করার কথা বলেছেন এমনটাই সুত্র মারফত জানা যাচ্ছে। নরেন্দ্র মোদীর বঙ্গ সফরে আসার আগে ৮ প্রশাসনিক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন দিব্যেন্দু। এদিনের মোদি-দিব্যেন্দু সাক্ষাৎ এর ফলে শিশির অধিকারীর আর এক পুত্র দিব্যেন্দুর দলবদলের জল্পনা প্রকট।
পূর্ব এবং পশ্চিম মিলিয়ে দুই জেলার ৩৫ আসনে বিজেপি ও তৃণমূলের জোড় লড়াই একপ্রকার নিশ্চিত। দিলীপ ঘোষের একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। শুভেন্দুর বিজেপি যোগদান পাশপাশি দিব্যেন্দুর দলবদলের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রবিবারের মোদী মঞ্চ অনেককিছু বদলে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রাখল। রাজীব-শুভেন্দু একুশের ভোটের প্রধান দুই সৈনিক কাছে টেনে নিয়ে বোঝালেন তিনি। শনিবারের সভা থেকে অভিষেক বলেছে “মেদিনীপুর জেলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জেলা। কোন অধিকারী গড় নয়। ক্ষুদিরাম বসুর গড়। সেদিন যে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছিল, এখন তার পায়ে হাত দিয়েই প্রণাম করছে”। মেদিনীপুরের মাটির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক। তাঁর একদিন পর মনীষীদের প্রণাম করে পাল্টা বার্তা দিয়ে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ‘কিষাণ সম্মান নিধি’, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প বাংলায় বাস্তবায়িত করাই তাঁর লক্ষ্য ভাষণে তাও উল্লেখ করেন তিনি।
গ্রাফিক রাজন্যা নিউজ।