দলের সংগঠন তিনি দেখবেন সাংসদদের জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কিন্তু কেন ?
কল্যাণ অধিকারী
রাজনৈতিক জীবনে অনেক লড়াই করেছেন। আঘাত পেয়েছেন দ্বিগুণ। যুব কংগ্রেস নেত্রী হয়ে বামেদের উৎখাতে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন। তারপর কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন একটি পরিবার। নাম দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস। লড়াই চালিয়েছেন প্রবল প্রতিপক্ষ বামেদের বিরুদ্ধে। চুলের মুঠি ধরে মহাকরণ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল মমতাকে। তার আগে মমতার মাথায় লাঠি মারার অভিযোগ ছিল। বহু কষ্ট ও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় তৃণমূল কংগ্রেস। এবার থেকে দলের সংগঠন তিনি দেখবেন জানান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৭০-এর দশকে বুথ স্তরের সাধারণ কর্মী হয়েই রাজনৈতিক হাতেখড়ি। তবে স্বাধীনতা সংগ্রামীর মেয়ে হওয়ার সুবাদে লড়াইটা ছোট থেকেই রপ্ত করেছিলেন তিনি। তাঁর ছত্রছায়ায় রাজনৈতিক নেতা হয়েছেন বাংলার বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সকাল-সন্ধে মমতাকে আক্রমণ শানানো শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের টিকিটে দুবারের সাংসদ হয়েছেন। যদিও একুশের নির্বাচনের ঠিক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর বাবা শিশির অধিকারী এবং ভাই দিব্যেন্দু এখনও খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ। এদিকে দলের বড় পদে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দলের সংগঠন নিজের হাতে রাখতে চান মমতা। দলের সাংসদ, বিধায়কদের কোন অভিযোগ থাকলে দলের মধ্যে কাদের বলবেন তাও বৃহস্পতিবার ঠিক করে দিলেন।
মমতা চান না কোনভাবেই দলের রাশ হাত থেকে বেরিয়ে যায়। কল্যাণ-অভিষেক দ্বন্দ্ব অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। জাতিয় স্তরে তৃণমূল বড় হলেও রাজ্যে কোনভাবেই গাছাড়া ভাব দেখাতে নারাজ নেত্রী। তাঁর সাফ জবাব, দলের গুরুদায়িত্ব তিনি নিজের হাতেই রাখবেন। কোটি কোটি মানুষ আজও তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন। দলে কোন বিশৃংখলা তিনি বরদাস্ত করবেন না। প্রয়োজনে রাজ্যের বাইরে দলের সংগঠন বাড়ানোর কাজ করে যাক অভিষেক, চান মমতা। কিন্তু রাজ্যের মধ্যে কোন অসন্তোষ হোক তিনি চান না। ২৪-এর ভোটের আগে লড়াকু মনোবৃত্তি নিয়েই দলকে ঢেলে সাজাতে চাইছেন জননেত্রী, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
আগামী লোকসভা ভোটে রাজ্যে ৪২টি আসনে কে প্রার্থী হবেন তার রাশও মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই থাকলো। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় পুরভোট তৃণমূলের লক্ষ্য বিরোধীদের অক্সিজেন না দেওয়া। তারজন্য লড়াই পুরোদমে চালিয়ে যেতে হবে, বৃহস্পতিবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।